আন্দোলনকারীদের হত্যার দায়মুক্তির আইনই শেষ আইন নয়, ভবিষ্যতে আরও আইন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ। বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আন্দোলন দমনে গণহত্যার লাইসেন্স প্রদান করার পর এখন সরকার হত্যার দায়মুক্তির আইন করছে। শাসকগোষ্ঠীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই- এই আইন শেষ আইন হবে না, ভবিষ্যতে আরও আইন হবে। অসাংবিধানিক, মৌলিক ও মানবাধিকার হরণকারী কোন আইন আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না। আজ্ঞাবহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় কর্তা ব্যক্তিদের। নারকীয় কর্মকাণ্ডের সকল রেকর্ড জনগণ সংগ্রহ করেছে। আজ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নামে নৈতিকতা বিবর্জিত প্রহসনমূলক একটি নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা লুণ্ঠন করে বিশ্ববেহায়া সরকার এখন জনগণের সঙ্গে প্রতারণায় লিপ্ত। যে সংসদে ১৫৪ জনই বিনাভোটে নির্বাচিত, বাকি ১৪৬ আসনে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা মিলেমিশে বাটোয়ারায় নির্বাচিত। এমনকি এরশাদসহ তার দলের বেশ কয়েকজনকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয়ার পরও জোরপূর্বক নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগ অনেক বিরোধী প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেয়নি এবং অনেক প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার পরও ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। গত ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনী নাটকে এবার ঠিক উল্টোভাবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর আওয়ামী লীগ দলীয় এবং জাতীয় পার্টির (এরশাদ) অনেক প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। মূলত আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে গণতন্ত্রে কখনোই বিশ্বাসী ছিল না বরং প্রতিবারই গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছে। বর্তমানেও তারা গণতন্ত্রের মোড়কে একদলীয় বাকশাল কায়েমের তৎপরতায় লিপ্ত।
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এদেশের গণতন্ত্রকামী সংগ্রামী জনগণ সবসময় একদলীয় একনায়কতন্ত্রকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এখনও রক্তঝরা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শাসকগোষ্ঠীর সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের যশোরের বাসভবনে বোমা হামলা চালিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। যশোরের বিএনপি’র শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের বাসায়ও একযোগে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এই ঘৃণ্য তৎপরতার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তিনি বলেন, গণমানুষের ন্যায্য আন্দোলনকে প্রতিহিংসার স্টিম রোলার চালিয়ে স্তব্ধ করা যাবে না। বরং দ্রোহের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ দিকে দিকে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। গণআন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে সেই দাবানলেই অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতার মসনদ জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে। তিনি বলেন, বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোট গণতন্ত্র ও শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক জোট। আমরা জাতীয় রাজনৈতিক সংকট সমাধানে আলোচনা, সংলাপ-সমঝোতায় বিশ্বাসী। জাতীয় এবং জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক মহলের সংকট নিরসনের সকল উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই সরকারি মহলের শুভবুদ্ধির উদয় হবে বলে জনগণ আশা করে। অন্যথায় উদ্ভূত যে কোন পরিস্থিতির দায় সরকারকেই নিতে হবে।