সব জল্পনা-কল্পনা ও নানা সিনেম্যাটিক ঘটনার পর অবশেষে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদের চেয়ারে বসলেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। চেয়ারে বসে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এই চিত্রনায়ক বলেন, ‘আমি শিল্পীদের ভোটে টানা তৃতীয় বার নির্বাচিত হয়েছি। তারপরও নানা নাটকীয় ঘটনা তৈরি করা হয়। যা সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলাম। অবশেষে সত্যের জয় হয়েছে।’
এসব ঘটনায় সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তার ভাষ্য, ‘আদালতের রায়ে জায়েদ খান তার পদ ফিরে পেয়েছেন। এখন তাকে সম্মানের সঙ্গে সেই পদ ও চেয়ার ফিরিয়ে দেওয়া আমাদের সকলের কর্তব্য। শিল্পী হয়ে আমরা যদি আদালতের রায় না মানি তাহলে দেশের মানুষ আমাদের দেখে কি ভাববে? সে কারণে আমার জায়গা থেকে আমি নিপুণকে ফোন দিয়েছি, কিন্তু তিনি ধরেননি; কেবল একটি টেক্সট দিয়ে জানিয়েছেন- পাঁচ মিনিট পর ফোন ব্যাক করবেন কিন্তু করেননি। এটা খুব অন্যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আজ জায়েদকে সমিতিতে না ঢুকতে দেয় তাহলে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আমি নিজে তালা ভেঙে জায়েদকে তার চেয়ারে বসাবো। আদালতের রায়ে এই চেয়ার এখন ওর প্রাপ্য।’
এদিকে, আজ বুধবার দুপুরে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বৈধ বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এরপর জায়েদ খান গিয়েছিলেন শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে। কিন্তু কার্যালয়ে তালা থাকার কারণে ঢুকতে পারেননি তিনি।
অন্যদিকে, নিপুণ-জায়েদ খান পক্ষ-বিপক্ষের অনুসারীরা দুপুর থেকে এফডিসি-জুড়ে জটলা পাকিয়ে রেখেছিলো বিভিন্ন স্থানে। সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে তৈরি হওয়া উত্তেজনায় বড় অঘটনের কারণ হতে পারে আর সে কারণেই এদিন সন্ধ্যায় ঝটিকা অভিযান চালান তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি ও পুলিশের অন্য সদস্যরা।
হঠাৎ ধাওয়া খেয়ে শিল্পী সমিতির এক সদস্য (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ‘এফডিসির জীবনে এমন ঘটনা আগে আর ঘটেনি। পুলিশের এমন হঠাৎ ধাওয়া বিস্ময়কর ঘটনা।’
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি আবুল কালাম জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে তারা এমন অভিযান নিয়মিত করেন। তিনি আরও বলেন, ‘এফডিসি তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার অধীনে। এটি কেপিআই ভুক্ত এরিয়া। তাই নিয়মিত ডিউটি হিসেবে তারা এই অভিযান চালিয়েছে।’
এদিকে এমন ধাওয়ার পরেও এফডিসির উত্তাপ কমেনি একটুও। বরং বেড়েই চলেছে। নিপুণ ও জায়েদ খান দুজনেই দলবল নিয়ে অবস্থান করছেন এফডিসিতে। দ্রুত সময়ের মধ্যে দুই পক্ষের তারকা শিল্পী-প্রযোজকরাও ক্রমশ জমায়েত হচ্ছেন।
জায়েদ খানের পক্ষ থেকে জানা যায়, তিনি হাইকোর্টের রায়ের কপি হাতে নিয়ে সমিতির তালা ভাঙবেন। অন্যদিকে নিপুণ জানালেন, তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।