জামালপুর: সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, ‘মানুষের পেটে ভাত নেই, অথচ দেশ নাকি উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। ’
তিনি বলেন, ‘সংসদে আমি বলেছিলাম, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বাজারে আগুন।
চলমান ভয়াবহ করোনার প্রভাবে কত মানুষ চাকরি হারিয়েছে, অনেক মানুষ বেকার হয়েছে, অনেকেই পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে, আজ তাদের ঘরে চাল নেই, তারা ঘরের ভাড়া দিতে পারে না। সংসার চালতে হিমশিম খাচ্ছে। আর তাদের সঙ্গে মশকরা করে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। নিম্নমধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নআয়ের মানুষের পেটে ভাত নেই, অথচ দেশ নাকি উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। এটা কি জনগণের উন্নয়ন, না সরকারি দলের নেতাকর্মীদের পকেটের উন্নয়ন হচ্ছে?’
বুধবার (২ মার্চ) দুপুরে জামালপুর জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রুমিন ফারহানা আরও বলেন, ‘করোনার কারণে আজ সাড়ে পাঁচ কোটি থেকে ছয় কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। আরও কত মানুষ কাজ হারিয়েছে। বহু মানুষ চিরতরে শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গেছে- এ সরকারের কাছে কোনো হিসাব নাই। সরকার বলে মাথাপিছু আয় নাকি বেড়ে গেছে, আরে সরকারের সঙ্গে সাধারণ মানুষের আয় যখন যুক্ত হয়, তখন তো মাথাপিছু আয় বেশিই মনে হবে। এটা তো মাথাপিছু আয় না, এটা হলো লুটেরা সরকারের বানানো আয়। আজ সাধারণ মানুষের অবস্থা দিনের পর দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। এদিকে সরকারের কোনো নজর নেই। ’
তিন বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সাল যখন আমরা ছিলাম, তখন চালের দাম ১৭ থেকে ২০ টাকা কেজি, আর এখন সেই চালের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ টাকা কেজিতে। ৭০ টাকা কেজি চাল প্রধানমন্ত্রী আপনি কিনে খেতে পারেন, আমরা তো পারি না, সাধারণ মানুষ কিনে খেতে পারে না। আমাদের সময় পেঁয়াজের দাম ছিল আট টাকা কেজি, এখন সেই পেঁয়াজের দাম ৫৫ টাকা করে, সেই পেঁয়াজ দিয়ে আপনার বাসায় রান্না হয়। আপনি বলতে পারেন, রান্নায় পেঁয়াজ খাওয়া কমাইয়া দেন। পরিষ্কার করে বলতে চাই, জনগণের সঙ্গে মশকরা করার মাশুল কিন্তু অনেক চড়া। আপনারা দেখেছেন, জনগণের সঙ্গে মশকরা করার ফলে ২১ বছর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন, ক্ষমতায় আসতে পারেন নাই। ’
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতা ছেড়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিলে ৪২ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। ’
জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুনের সঞ্চালনায় আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, জলবায়ু বিষয়ক সহ-সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি খন্দকার মাকসুদ আলম ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সফিউর রহমান সফি, অ্যাডভোকেট মনজুর কাদের বাবুল খান, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম খান সজিবসহ অনেকে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।