ইউক্রেনে রুশ হামলার আশঙ্কায় আগে থেকেই অস্থির ছিল বৈশ্বিক পণ্য বাজার।
বৃহস্পতিবার রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর একদিনেই জ্বালানি তেলের দাম ৮ শতাংশের বেশি বেড়ে প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়।
সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার উদ্বেগে বাড়ে প্রাকৃতিক গ্যাস, সোনা, গমসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম। অস্থিরতায় বড় ধরনের দরপতন ঘটে বিভিন্ন দেশের প্রধান শেয়ারবাজারগুলোতে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেনে হামলা শুরুর পরপরই আজভ সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল স্থগিত করে রাশিয়া। এটি কৃষ্ণসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত, যার ফলে বাধাগ্রস্ত হবে পণ্য রপ্তানি।
বিশ্বে গম সরবরাহের ২৯ শতাংশ, ভুট্টার ১৯ শতাংশ এবং সূর্যমুখী তেলের ৮০ শতাংশ আসে ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে।
এর পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দ্বিতীয় বৃহৎ ও গ্যাসের শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া। এ যুদ্ধে বৈশ্বিক পণ্য ও জ্বালানি সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় সব পণ্যের দামই বাড়ছে।
পণ্য বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার লন্ডনের অপরিশোধিত ব্রেন্ট তেলের দাম ৮.৩০ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেল হয় ১০৫ ডলার। এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত ডাব্লিউটিআই তেলের দাম ৭.৯০ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেল হয় ৯৯.৪৩ ডলার।
তেলের এই দাম গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ, যা ২০১৪ সালের পর দেখা যায়নি। আবার, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব পড়ছে গ্যাসের বাজারেও।
বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে টিটিএফ গ্যাসের দাম ৩৫ শতাংশ বেড়ে প্রতি মেগাওয়াট আওয়ার হয় ১২০ ইউরো। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ৫ শতাংশ বেড়ে প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থারমাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) হয় ৪.৯০ ডলার। যুক্তরাজ্যেও গ্যাসের দাম বাড়ে ৩৯.২২ শতাংশ।
ইউরোপ প্রায় ৩৫ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। সে কারণেই জ্বালানিপ্রাপ্তির উদ্বেগ থেকে ব্যাপক হারে এর দাম বেড়েছে।
ট্রেডিং ইকোনমিকস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সোনার দাম ২.৭২ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স হয় ১৯৫৯.২২ ডলার এবং রুপার দাম বাড়ে ৩.২৮ শতাংশ।
এছাড়া সব খাদ্যপণ্যের দামও ঊর্ধ্বমুখী। গমের দাম বেড়েছে ৫.৭১ শতাংশ, সয়াবিন ২.৯১ শতাংশ, পাম তেল ৫.১৮ শতাংশ এবং ভুট্টার দাম বেড়েছে ৫.১২ শতাংশ।