হিজাব মামলার দ্রুত শুনানির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘আমরাও জানি যে রাজ্য (কর্নাটকে) কী হচ্ছে, আমরা উপযুক্ত সময় বিষয়টি শুনব।’
কর্নাটকে হিজাব বিতর্কে হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন এক শিক্ষার্থী। জরুরি শুনানির আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শুক্রবার সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন শীর্ষ আদালত।
আইনজীবী দেবদূত কামাত বলেন, ‘হাইকোর্ট বলেছে যে স্কুল ও কলেজে যাওয়ার সময় কোনো শিক্ষার্থীর ধর্মীয় পরিচয় দেখানো উচিত নয়। শুধু মুসলিম নয়, সব ধর্মের ক্ষেত্রেই এটার দীর্ঘকালীন প্রভাব আছে। উদাহরণ হিসেবে শিখরা পাগড়ি পরেন।’
বৃহস্পতিবার হিজাব মামলার শুনানিতে কর্নাটক হাইকোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ জানায়, দ্রুত হিজাব বিতর্কের সমাধান করতে চায় হাইকোর্ট। সেইসময় পর্যন্ত শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে।
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের এরকম সব ধর্মীয় জিনিস পরার উপর জেদ ধরে থাকা উচিত নয়।’
সেইসাথে তিনি বলেন, ‘আমরা রায় দেব। স্কুল ও কলেজ শুরু হতে দিন। কিন্তু বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ধর্মীয় পোশাক পরার ক্ষেত্রে কোনো শিক্ষার্থীর জেদ ধরে থাকা উচিত নয়।’
তবে কর্নাটক হাইকোর্টের সেই রায় এখনো আপলোড করা হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্না বলেন, ‘ইতোমধ্যে আদালত (হাইকোর্ট) মামলাটি শুনছে। আমরা জানি না যে কী রায় দেয়া হয়েছে।’
রায় আপলোড না হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি কিছু বলতে চাই না। এটাকে বৃহত্তর ক্ষেত্রে নিয়ে যাবেন না। আমরা এটাও জানি যে রাজ্যে কী হচ্ছে। আপনাকেও এটা ভাবতে হবে যে বিষয়টি দিল্লিতে নিয়ে আনা ঠিক কিনা। নিশ্চয়ই আমরা খতিয়ে দেখব। আমাদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করতে করতে হবে।’
সাথে তিনি জানান, বিষয়টি উপযুক্ত সময় শুনবে শীর্ষ আদালত।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে হিজাব পরিহিত কিছু মুসলিম ছাত্রীকে কর্নাটকের উদুপির একটি সরকারি কলেজে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়েছিল। পরে একাধিক কলেজে সেরকম নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। গত কয়েকদিনে সেই পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠেছে।
মঙ্গলবার সকালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উদুপির মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল কলেজে। গেরুয়া স্কার্ফ ও পাগড়ি পরে কলেজের বাইরে জড়ো হন একদল ছাত্র। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে থাকেন তারা। পাল্টা ‘ন্যায়বিচারের’ স্লোগান দেন হিজাব পরিহিত ছাত্রীরা। হিজাব পরা ছাত্রীদের দাবি, অধ্যক্ষ ক্লাসে ঢুকতে দেননি। একাধিক কলেজে সেরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিক্ষোভ, পাল্টা বিক্ষোভ হয়।