অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের মামলায় পুরান ঢাকার আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক স্বাক্ষরিত এ রায় প্রকাশ করা হয়। এ মামলায় হাজী সেলিম বর্তমানে জামিনে আছেন।
এর আগে এ মামলায় হাজী সেলিমের ১৩ বছর কারাদণ্ডের মেয়াদ কমিয়ে ১০ বছর বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ-সংক্রান্ত এক আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হক সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বছরের মার্চে এ রায় ঘোষণা করেন।
প্রায় দুই যুগ আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা ওই মামলায় পৃথক দুটি ধারায় হাজী সেলিমকে ১০ বছর ও তিন বছর কারাদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন এবং ৫৯ কোটি ৩৭ লাখ ২৬ হাজার ১৩২ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলা করে দুদক। ওই মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল হাজী সেলিমকে দোষী সাব্যস্ত করে দুদক আইনের দুটি ধারায় মোট ১৩ বছর কারাদ দেন সংসদ ভবন সংলগ্ন বিশেষ জজ আদালত। পাশাপাশি ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহায়তা করার অভিযোগে এ মামলায় তার স্ত্রী গুলশান আরা বেগমকে (বর্তমানে প্রয়াত) তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ওই আদালত। ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর হাজী সেলিম বিচারিক আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। পরে ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি তার সাজা বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করে দুদক।
ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টকে হাজী সেলিমের আপিলের শুনানি করতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। ওই নির্দেশনার পর গত বছর ৯ নভেম্বর মামলাটি শুনানির জন্য উদ্যোগী হয় দুদক।
এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১১ নভেম্বর আপিলের শুনানিতে হাজী সেলিমের মামলার যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেন হাইকোর্ট। ওই নথি পাওয়ার পর ৩১ জানুয়ারি শুরু হয় হাইকোর্টে পুনঃশুনানি। এরপর রায় ঘোষণা করেন আদালত।