ভারতের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। আজ রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মুম্বাইয়ের শিবাজি পার্কে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন শেষ সেখানেই তার দাহকাজ সম্পন্ন হয়।
সন্ধ্যা ৭টায় লতার ‘মুঝে ভুলা না পাওগে…’ গানের মধ্যে দিয়েই চোখের জলে শেষবিদায় জানানো হয় গুণী এই কণ্ঠশিল্পীকে। ভক্ত-অনুরাগীরা বলছেন, পার্থিব শরীরে না থাকলেও লতা মঙ্গেশকর তার প্রতিটি গানের মধ্য দিয়ে বিশ্বের অসংখ্য মানুষের হৃদয়ে থেকে যাবেন।
আজ রোববার সকালে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকাসহ একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রায় চার সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন শিল্পী। সম্প্রতি অবস্থার উন্নতিও হচ্ছিল। কিন্তু গতকাল শনিবার আচমকা তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। দিতে হয় ভেন্টিলেশনে। সেখান থেকে আর ফেরানো যায়নি সুর সম্রাজ্ঞীকে।
কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় গত ১১ জানুয়ারি লতা মঙ্গেশকরকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত ছিলেন এই শিল্পী। প্রথম থেকেই তাকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছিল। ৩০ জানুয়ারি শিল্পীর কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু বয়সজনিত নানা সমস্যায় শেষ পর্যন্ত আর লড়তে পারলেন না তিনি।
এর আগেও সঙ্কটজনক অবস্থায় একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল লতাকে। কিন্তু অনুরাগীদের আশ্বস্ত করে প্রত্যেকবারই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন।
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর লতার জন্ম এক মারাঠি পরিবারে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবাকে হারান। তার আগে অবশ্য বাবার হাত ধরেই অভিনয় ও গান শিখতে শুরু করে দিয়েছিলেন। ১৩-১৪ বছর বয়সেই প্রথমবার সিনেমায় গান গাওয়া মরাঠি ছবিতে। মুম্বাই যাওয়ার পর ১৯৪৮ সালে প্রথম হিন্দি ছবি ‘মজবুর’ ছবিতে গান করনে তিনি।
গান গেয়ে অনেক সুনাম ও সম্মান অর্জন করেছেন ভারতের নাইটিঙ্গেল হিসেবে পরিচিত লতা মঙ্গেশকর। পেয়েছেন পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ, দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার। সেরা প্লে-ব্যাকের জন্য তার ঝুলিতে রয়েছে একাধিক জাতীয় পুরস্কারও।