জিম্বাবুয়েকে ২৩৬ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

Slider খেলা

first_half_bg_409493033

ঢাকা: নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ২৩৫ রান। জিততে হলে জিম্বাবুয়েকে করতে হবে ২৩৬ রান।

উপরের সারির ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও পাকিস্তানের অধিনায়ক মিসবাহ উল হক করেন ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৩ রান। এছাড়া দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট চালিয়ে ওয়াহাব রিয়াজ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক তুলে করেন অপরাজিত ৫৪ রান ও উমর আকমল করেন ৩৩ রান।

টানা দুই ম্যাচ হেরে এমনিতে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে রয়েছে ৯২’র বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। রোববার গ্রুপ পর্বের ২৩তম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুরুটা মোটেও ভাল করতে পারেন নি পাকিস্তান। প্রথম চার ওভারেই দুই ওপেনারকে সাজঘরে পাঠায় টেন্ডন চাতারা। চাতারা ব্যক্তিগত প্রথম ২ ওভারে কোনো রান না দিয়েই তুলে নেন আহমেদ শেহজাদ ও নাসির জামসেদের উইকেট।

প্রথম ওভারে পানিয়াঙ্গারার বলে অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরত যান উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান নাসির জামশেদ। দলীয় স্কোর বোর্ডে মাত্র এক রান যোগ করেই বিদায় নিতে হয় তাকে। টেন্ডাই চাতারার বলে সিকান্দার রাজার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

চতুর্থ ওভারে আবারো আক্রমণে এসে চাতারা ফেরান আরেক ওপেনার আহমেদ শেহজাদকে। দলীয় ৪ রানের মাথায় কোনো রান না করেই উইকেটের পিছনে টেইলরের গ্লাভসবন্দি হন শেহজাদ।

সাময়িক বিপর্যয় সামলে উঠে নিজেদের ম্যাচে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন পাকিস্তান দলপতি মিসবাহ উল হক এবং হারিস সোহেল। তবে, ২১তম ওভারের প্রথম বলে সিকান্দার রাজার বলে উইলিয়ামসের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন ৪৪ বলে ২৭ রান করা হারিস সোহেল। দলীয় ৫৮ রানের মাথায় পাকিস্তানের তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে।

এরপর উইলিয়ামসের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন উমর আকমল। আউট হওয়ার আগে অধিনায়ক মিসবাহর সঙ্গে তিনি ৬৯ রানের জুটি গড়েন। আকমলের বিদায়ের পর জন্মদিনের দিন খেলতে নামা পাকিস্তানের বুমবুম আফ্রিদি ক্রিজে আসেন। কিন্তু তাকেও একই ওভারে শুন্য রানে বিদায় করেন উইলিয়ামস।

অধিনায়ক মিসবাহ ব্যাটিং ক্রিজের একপ্রান্ত ধরে রাখলেও পাকিস্তানের অন্য ব্যাটসম্যানরা আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন। ৩৯তম ওভারে সোয়েব মাকসুদকে বিদায় করেন মুপারিওয়া। জিম্বাবুয়ের এ বোলারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে মাকসুদ করেন ১৭ বলে ২১ রান।

মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গ না পাওয়ায় একাই রান বাড়ানো চেষ্টা করেন পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ। ওয়াহাব রিয়াজকে নিয়ে বেশ সতর্ক হয়েই ব্যাট চালান তিনি। কিন্তু ৪৭তম ওভারে চাতারার করা প্রথম বলে উইলিয়ামসের হাতে ধরা পড়েন মিসবাহ।

আউট হওয়ার আগে মিসবাহ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪০তম অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৭৩ রান করেন।

পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভার থেকে পাকিস্তান দুই ওপেনারকে হারিয়ে তোলে মাত্র ১৪ রান। যা বিশ্বকাপের আসরে পাকিস্তানের বেশ লজ্জারই। এর আগে ২০১১ সালের বিশ্বকাপে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাওয়ার প্লে’তে তিন উইকেট হারিয়ে কানাডা তুলেছিল মাত্র ১৪ রান। ২০ ওভার শেষে দুই উইকেটে পাকিস্তান করে ৫৮ রান। আর ৩০ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় তিন উইকেটে ১১৩ রান। ৪০ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১৬২ রান করে পাকিস্তান।

অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনের গ্যাবায় পুল ‘বি’র ম্যাচে টস জিতে পাকিস্তানের অধিনায়ক মিসবাহ উল হক ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন। পাকিস্তানের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন আহমেদ শেহজাদ এবং নাসির জামসেদ। জিম্বাবুয়ের হয়ে বোলিং সূচনা করেন তিনাশে পানিয়াঙ্গারা।

৯২’র বিশ্বকাপে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া পাকিস্তান এবারের আসরে হার দিয়ে শুরু করে তাদের বিশ্বকাপ মিশন। প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে হারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছেও উড়ে গেছে পাকিস্তান।

তবে পরিসংখ্যান কথা বলছে পাকিস্তানের হয়ে। এর আগে কোনো আসরেই টানা তিন ম্যাচ হারেনি পাকিস্তান। পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের এ পর্যন্ত ৪৭ বার মুখোমুখি হয়। মাত্র তিনবার শেষ হাসি হেসেছে আফ্রিকার দলটি।

এ ম্যাচের আগে সাম্প্রতিক সময়ের সর্বশেষ ৫টি ম্যাচের ৫টিই হেরেছে পাকিস্তান আর ৫টি ম্যাচের একটিতে জয় পেয়েছে জিম্বাবুয়ে।

পাকিস্তান দল:আহমেদ শেহজাদ, নাসির জামসেদ, হারিস সোহেল, মিসবাহ উল হক, উমর আকমল, সোয়েব মাকসুদ, শহীদ আফ্রিদি, রাহাত আলী, মোহাম্মদ ইরফান, সোহেল খান এবং ওয়াহাব রিয়াজ।

জিম্বাবুয়ে দল: এলটন চিগুম্বুরা (অধিনায়ক), সিকান্দার রাজা, তেন্দাই চাতারা, চামু চিভাভা, ক্রেইজ আরভিন, হ্যামিলটন মাসাকাদজা, সলোমন মিরে, মুপারিওয়া, তিনাশে পানিয়াঙ্গারা, ব্রেন্ডন টেইলর এবং শেন উইলিয়ামস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *