গেল শুক্রবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে উত্তাল বিএফডিসি। এদিন জানানো হয়, শিল্পীদের নির্বাচন দেখতে এফডিসিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না চলচ্চিত্রের বাকি ১৭ সংগঠনের সদস্যদের৷ নানা নাটকীয়তার পরও শেষ পর্যন্ত ওই ১৭ সংগঠনের সদস্যদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
এদিকে, শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে এখনো আন্দোলনে উত্তাল এফডিসি। ১৭ সংগঠনের নেতারা তিন দফা দাবি ঘোষণা করেন। তার মধ্যে একটি দাবি হলো- আজ রোববার থেকে এফডিসির এমডি নুজহাত ইয়াসমিনকে কর্মস্থলে ঢুকতে না দেওয়া এবং তার অপসারণ। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ সকাল ৯টা থেকে এফডিসির ফটকে অবস্থান করেন ১৭ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এফডিসির ভেতরে ১৭ সংগঠনের নেতাকর্মীদের অবস্থান
তবে তার আগেই সকালে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে এফডিসিতে প্রবেশ করেন এমডি নুজহাত ইয়াসমিন। আর ডাকেন সংবাদ সম্মেলনও। যেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নুজহাত ইয়াসমিন বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণেই প্রশাসন থেকে আমাদের কিছু নিয়ম বেঁধে দিয়েছে। অনেকগুলো নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি- শিল্পীদের ভোটারের সংখ্যা ৪২৮ জন, তার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ভোটের সঙ্গে মানুষজন ছাড়া আর অন্য কারও প্রবেশ করার দরকার নাই। আমরা সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে (পীরজাদা হারুন) ঠিক করতে বলেছি, এফডিসিতে কে আসবে আর কে আসবে না। এর মধ্যে এফডিসিতে অন্যান্য সংগঠনের নেতারা যারা আছেন, তারা আমাকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন, বলেছিলেন- এফডিসির পাশ যাদের আছে তাদের ঢুকতে দেওয়ার অনুমতি যাতে দেওয়া হয়। কিন্তু সেটা আমাদের মানা সম্ভব হয়নি। কারণ মন্ত্রী পরিষদ থেকে এমন নিদের্শ ছিল না। আর এখানে তো আমার বলারও কিছুই নাই।’
এদিকে, এফডিসির এমডি যখন সংবাদ সম্মেলন করছেন, তখন প্রশাসনিক ভবনের বাইরে তার অপসরনের দাবি তুলে কুশপুত্তলিকা দাহ করে ১৭ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তিন দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতির ডাকও দিয়েছে তারা। শুধু তাই নয়, তার অপসারণ দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কথাও উঠেছে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার অপসারণ চেয়ে অনুরোধ করবে নেতারা।
এফডিসির ভেতরে ১৭ সংগঠনের নেতাকর্মীরা
অন্যদিকে, এফডিসিতে কর্মবিরতি অবস্থান চলাকালে পরিচালক সমিতির মহাসচিব বলেন, ‘এই এমডি চলচ্চিত্রবান্ধব নয়৷ তিনি আমাদের চলচ্চিত্রের সবাইকে অপমান করেছেন৷ বারবার তার কাছে নানা ইস্যু নিয়ে গেলে তিনি বাজে ব্যবহার করে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আমাদের কোনো কথাই কোনোদিন শোনেননি৷ আমরা এমন এমডি চাই না৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আদেশ অমান্য করে তিনি আমাদের এফডিসিতে ঢুকতে দেননি৷ আমরা তার অপসারণ চাই।’
পরিচালক নেতা এস এ হক অলিক বলেন, ‘আমরা এমন এমডি দিয়ে কি করবো? তিনি কতগুলো যন্ত্রপাতি এনে ফেলে রেখেছেন। তার একটা লোকও আমাদের কাজে আসে না। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেবো তার অপসারণ চেয়ে। প্রয়োজনে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার অপসারণ চেয়ে অনুরোধ নিয়ে যাবো। এই এমডি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এফডিসিকে ধ্বংস করছেন।’
পরিচালক নেতা বদিউল আলম খোকন বলেন, ‘প্রযোজকরা টাকা লগ্নি করে বলে আমরা পরিচালকরা সিনেমা বানাই৷ আর পরিচালকরা সিনেমা বানায় বলেই এফডিসি সচল থাকে, আপনি বেতন পান৷ আর সেই প্রযোজক-পরিচালকদের আপনি অপমান করেছেন। গেটের বাইরে সারাদিন বসিয়ে রেখেছেন। তিনি মোটেও চলচ্চিত্রবান্ধব না। তার সব কাজ চলচ্চিত্রের বিরোধী।’