তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন বলেছেন, চলমান সঙ্কটের উৎস নির্বাচন। এই সঙ্কটের সমাধান তো প্রধানমন্ত্রীর হাতে। তিনি নতুন নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বলেছিলন, সবার সঙ্গে আলোচনা করে আবার পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন দেয়া হবে। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন তার মতেই ছিল অপূর্ণাঙ্গ। সূতরাং প্রধানমন্ত্রীকে সেই প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দিতে আমাদের লজ্জা কেন? তিনি বলেন, এখন কথা বলতে গেলে ভয় পাই। মূসা ভাই নীরব থাকা সমর্থন করেননি। এজন্য বলছি, নির্বাচন দিলে সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ হতে বাধ্য। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা নির্বাচন বাদ দিয়ে পুলিশি কায়দায় সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ করছেন। এই অবস্থায় সুযোগ নিচ্ছে, সুবিধাবাদীরা। শনিবার দুপুরে প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম মূসার স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন। ব্যারিস্টার মঈনুল বলেন, আজকে আমরা সাংবাদিক-আইনজীবীরা নিজেদের শক্তি হারিয়ে দলীয় শক্তিতে পরিণত হয়েছি। এতে কেবল নিজেরাই শক্তিহীন হইনি, পুরো জাতিকে শক্তিহীন করছি। গণতন্ত্র মাঠে মারা যাচ্ছে। গণতন্ত্র রক্ষার শক্তি রাজনীতিবিদরা নন। সাংবাদিক ও আইনজীবীদের এ কাজ করতে হবে। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর মতো দলের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।
সৈয়দ আবুল মকসুদের সভাপতিত্বে ও রোবায়েত ফেরদৌসের পরিচালনায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন- প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, নিউজ টুডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, প্রবীণ সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীর, বৈশাখী টিভির সিইও মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাতীয় প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি কাজী রওনক হোসেন, সাংবাদিক আব্দুর রহীম, গোলাম মর্তুজা প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, সাহসী ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা করেছেন মূসা ভাই। তিনি সত্যকে সত্য বলেছেন। বিরোধিতা করলে, সেটাও ছিল তথ্যনির্ভর। আমরা এখানে বিতর্ক সৃষ্টি করতে আসিনি। তাই, তার রাজনৈতিক জীবন নিয়ে আলোচনা করছি না। আমানুল্লাহ কবীর বলেন, সাংবাদিকদের জীবনী আলোচনা করতে গিয়ে রাজনীতি এড়িয়ে যাওয়া যায় না। কারণ, রাজনীতির ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়েই সাংবাদিকের কাজ। এখন তো সাংবাদিক নেই; সব দলীয় কর্মী। চলমান সঙ্কট সমাধানে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, একদল অপর দলকে অস্ত্র দিয়ে মোকাবিলা করছে। পার্থক্য একটাই, কারও অস্ত্রের লাইসেন্স আছে, কারও নেই। অস্ত্র দিয়ে অস্ত্রের মোকাবিলা করতে গেলে রক্তক্ষরণ হবে। তিনি বলেন, এই সঙ্কটের সমাধান করতে হবে টেবিলেই। টেবিলের বাইরে সমাধান করতে গেলে যে পরিণতি হবে, সেটা আমাদের সামনেই দেখতেই পাচ্ছি। অভিজিৎ রায় হত্যা উদাহরণ হতে পারে।