নাশকতা দমনের নামে গুম খুন ও হত্যা মেনে নেয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।’নাশকতা দমনের নামে গুম-খুন মেনে নেয়া যায় না’
তিনি বলেন, ‘দেশ কোনোভাবেই স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। একটি মহল সব ঠিক আছে বলে সরকারকে ভুল বোঝাচ্ছে। নাশকতা দমনের অধিকার সরকারের রয়েছে। কিন্তু নাশকতা দমনের নামে গুম খুন ও হত্যা মেনে নেয়া যায় না। ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ ও গুম-খুন করে সহিংসতা বন্ধ করা যায় না। অন্যদিকে আন্দোলনের নামে পেট্রোলবোমার আক্রমণও জনগণ মানে না।’
শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিপিবি-বাসদের জাতীয় সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দেশকে সংকটমুক্ত করে সততা-দেশপ্রেম-আদর্শবাদের ধারায় জাতির অগ্রগতি নিশ্চিত করার জন্য সিপিবি-বাসদের নেতৃত্বে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তিকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে হবে। সেই লক্ষ্যে গ্রাম-শহর-বন্দরে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ ও সমবেত হয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
জোট ও মহাজোটের দ্বি-দলীয় কাঠামোতে দেশ আবদ্ধ হয়ে আছে-উল্লেখ করে সিপিবি সভাপতি বলেন, ‘বিএনপি জামায়াতকে জোটসঙ্গী করেছে। আওয়ামী লীগ জামায়াতকে প্রধান শত্রু হিসেবে গণ্য করার বদলে ক্ষমতার প্রতিযোগী বিএনপিকে কাবু করার কাজকে প্রাধান্য দিচ্ছে। এতে গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার বদলে দেশ সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য-অনিশ্চয়তার অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে। তাই বিএনপিকে জামায়াত ছাড়তে হবে এবং আওয়ামী লীগকে জামায়াত নিষিদ্ধ করতে হবে।’
সমাবেশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লেখক অভিজিৎ রায়ের খুনিদের গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি।
দুই জোটের সহিংস রাজনীতির বিপরীতে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ‘মানুষ বাঁচাও, দেশ বাঁচাও, গণতন্ত্র বাঁচাও’- এই স্লোগানে শুক্রবার এই জাতীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামের শহীদ তাজুল ইসলাম স্মরণে ১ মার্চ দেশব্যাপী ‘তাজুল দিবস’ পালন এবং ২ মার্চ থেকে ৮ মার্চ সারাদেশের জেলা-উপজেলায় সমাবেশ ও গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, বজলুর রশিদ ফিরোজ, সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা কাফি রতন প্রমুখ।
পরে একটি গণমিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।