আগের নিয়মে মাইলেজ ভাতার দাবিতে আন্দোলনে নামা রেলওয়ের চালকসহ রানিং স্টাফরা মঙ্গলবার থেকে দিনে আট ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না।
সোমবার রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও কর্মচারী শ্রমিক সমিতি এই কর্মসূচি ঘোষণা করে। চালকরা দিনে আট ঘণ্টার বেশি কাজ না করলে ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো মজিবুর রহমান সমকালকে বলেছেন, জনবল সঙ্কটে রেলের চালকসহ রানিং স্টাফদের বছরের প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। মঙ্গলবার থেকে নির্ধারিত কর্মঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না।
আগের নিয়মে মাইলেজ ভাতার দাবি পূরণ না হলে আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ট্রেন চালানো বন্ধের ঘোষণা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদারকে চিঠি দিয়েছে সমিতি। তবে মঙ্গলবার থেকে কর্মঘণ্টার বেশি কাজ না করার ঘোষণার বিষয়ে জানেন না বলে জানিয়েছেন ধীরেন্দ্রনাথ।
তিনি সমকালকে বলেছেন, বিষয়টি সুরাহা করতে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। অর্থ সচিবের সঙ্গেও কথা চলছে। ৩১ জানুয়ারির আগেই সমাধানের চেষ্টা চলছে।
ট্রেনের চালক (লোকো মাস্টার), গার্ড ও টিকিট পরিদর্শকদের (টিটি) রানিং স্টাফ বলা হয়। তারা দিনে আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বা ১০০ মাইলের বেশি ট্রেন চালালে একদিনের বেতনের সমপরিমাণ টাকা মাইলেজ বা রানিং ভাতা হিসেবে পেতেন। ভাতার ৭৫ শতাংশ পার্ট অব পে হিসেবে ধরে পেনশনে যোগ হতো। গত ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনে জানায়, মাইলেজ ভাতা পেনশনে যোগ হবে না। ভাতার পরিমাণ মাসিক মূল বেতনের বেশিও হতে পারবে না।
এই প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে আন্দোলতরত রানিং স্টফ সমিতির একাধিক নেতা সমকালকে জানিয়েছেন, ৩১ জানুয়ারি থেকে ট্রেন না চালালে কী পরিস্থিতি হবে, তা রেলের কর্তৃপক্ষকে বোঝাতেই মঙ্গলবার থেকে আট ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না চালকরা।
উদাহরণ দিয়ে নেতারা বলেন, ঢাকা থেকে পঞ্চগড় যেতে একটি ট্রেনের ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লাগে। মাঝরাস্তায় ট্রেন বন্ধ না করে ট্রেন শেষ গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হবে, যাতে যাত্রী দুর্ভোগ না হয়। কিন্তু পণ্যবাহী ট্রেন আট ঘণ্টার বেশি চালাবেন না চালকরা। গন্তব্যে পৌঁছানোর পর ১২ ঘণ্টা বিশ্রাম পাওনা চালকের। চালক সঙ্কটের কারণে তিন চার ঘণ্টার বেশি বিশ্রাম পান না। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে যাত্রা সম্পন্নের পর ১২ ঘণ্টা বিশ্রাম পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন চালাবেন না।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, চালক শ্রমিকরা নির্ধারিত কর্মঘণ্টার বেশি কাজ করেও যদি ভাতা না পান, তা যদি পেনশনে যোগ না হয়, তাহলে তারা কেন কাজ করবে। এখনও বহু চালক শ্রমিক ডিসেম্বর মাসের বেতন পাননি। অনুরোধ করে বেতন পেতে হলে, চালকরা কেন কাজ করবে?