শাবিপ্রবি (সিলেট): পদত্যাগ না করলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে আন্দোলনরত ১৪ শিক্ষার্থী ফটকে অবস্থান নেন। তারা বলেন, এখন থেকে পুলিশ ছাড়া উপাচার্যের বাসভবনে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না এবং কাউকে সেখান থেকে বের হতে দেওয়া হবে না।
আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, আমরা পাঁচ দিন ধরে একস্থানে বসে আছি। আমাদের সামনে দিয়ে উপাচার্যের বাংলোয় লোকজন আসা-যাওয়া করছে, বিষয়টি দেখেও খারাপ লাগছে। উপাচার্যের বাসায় সব ধরনের সুবিধা আছে। এরপরও তারা উপাচার্যের বাসায় বসে বিভিন্ন জনের সঙ্গে দেখা করছেন, আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এটা আমাদের জন্য পীড়াদায়ক। আমরা এখন কেবল লোকজনের যাওয়া-আসা বন্ধ করে রেখেছি।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, যেভাবে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে, তাতে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। প্রয়োজনে ভিসির বাসভবন পুরোপুরি অবরুদ্ধ করা হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মুহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, উপাচার্য পদত্যাগ না করলে তাকে বাসভবনে পুরোপুরি অবরুদ্ধ করা হবে। এখন থেকে ক্যাম্পাসে পুলিশ টিম, সংবাদকর্মী ছাড়া আর কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
রোববার গণ-অনশনে যোগ দিয়েছেন ৫ শিক্ষার্থী। এ দিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনশনরত ২৩ শিক্ষার্থীর সঙ্গে নতুন করে যোগ দেওয়া ৫ শিক্ষার্থীসহ মোট অনশনকারী বর্তমানে ২৮ জন। অনশনকারীদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৫ জন। বাকি ১৩ জন অনশনরত অবস্থায় উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থান করছেন।
উপচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর থেকে ২৪ শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেন। এর মধ্যে এক অনশনকারীর পরিবারের সদস্য হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ায় বাড়ি ফিরে গেছেন তিনি।
আন্দোলনের সূত্রপাত হয় গত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েকশ’ ছাত্রী।
এরপর ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগ হলের আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায়। পর দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার ঘোষণা দিলেও শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান। এরপর ১৯ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন ২৪ শিক্ষার্থী।