সিলেট: উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের ঢাকায় ডেকেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর সেই ডাক প্রত্যাখ্যান করে সিলেটে আসার অনুরোধ জানালেন শিক্ষার্থীরা।
তারা জানান, অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনেকেই অসুস্থ। শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে। এরমধ্যে চারজনকে নেবুলাইজার দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় তাদের রেখে অন্য শিক্ষার্থীরা ঢাকা যাবেন না।
শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকায় যাওয়া নিয়ে আলোচনা করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
তিনি আন্দোরনরত শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানান, শিক্ষামন্ত্রীর আহ্বানে ঢাকায় যেতে এবং যারা অনলাইনে যুক্ত হতে চায় তারা এখান থেকে যুক্ত হবে। নেতারা বুঝিয়ে বলেন, এসব সমস্যা অনলাইনে সমাধান করা যায় না, সরাসরি বসলে আলোচনা ফলপ্রসূ হবে।
তিনি বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বিষয়টি দ্রুত সমাধান করার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দেন। কিন্তু পরিবারিক সমস্যার কারণে শিক্ষামন্ত্রীর আসতে হলে আরও দুই/একদিন সময় লাগবে। এই সময়ের মধ্যে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনেকের শারীরিক অবস্থা আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। তাই সমাধানের দিকে যেতে চাচ্ছি।
কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিজেদের অসুবিধা কথা তুলে ধরে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী না আসতে পারলে ভার্চ্যুয়ালি তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের সঙ্গে আলোচনা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে অনশনরত পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদীন বলেন, অনশনের ৫৫ ঘণ্টা অতিবাহিত হচ্ছে। এরমধ্যে আমরা একফোঁটা পানিও পান করিনি। অনেককে চিকিৎসকরা বার বার সতর্কবার্তা দেওয়ার পরও অনশন ভাঙেননি। আমাদের অনেকেই অসুস্থ। কারও অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাচ্ছে। কারো ব্লাড প্রেশার ঠিক থাকতেছে না। এ অবস্থায় বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখানে থাকা শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের অবস্থা খুবই খারাপ।
তিনি বলেন, এরইমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী আন্দোলনকারীদের আলোচনার জন্য ঢাকা যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন, জানতে পারি। তার এই সহৃদয় প্রস্তাবকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে আমাদের কোনো প্রতিনিধি এ অবস্থায় ঢাকায় যাবেন না।
শাহরিয়ার আবেদীন বলেন, আমরা বিশ্বাস করি শিক্ষামন্ত্রী তার পেশাদারিত্বের বাইরেও একজন নারী এবং একজন মা। তাই আশাবাদী তিনি সন্তানদের আহ্বানে সিলেটে আসবেন।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে শাবিপ্রবির ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ চেয়ে তার বাসভবনের সামনে অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। ইতোমধ্যে ১৩ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, দু’জন রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং একজন মাউন্ট এডোরায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাছাড়া একজনের বাবা অসুস্থ হওয়াতে অনশন ছেড়ে বাড়ির উদ্দেশে গেছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, অনশনে যোগ দিতে আরও অনেক শিক্ষার্থী প্রস্তুত রয়েছেন।