ক্যাচ মিসের মহড়া দিয়ে আর বাজে ফিল্ডিংয়ের উদাহরণ তৈরি করে টাইগাররা লংকানদের বড় সংগ্রহ গড়তে বারবার সুযোগ দেয়। আর সে সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে ৩৩২ রান করে শ্রীলংকা।
দলীয় ১২২ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দিলশান আর সাঙ্গাকারা মিলে অবিচ্ছিন্ন ২১০ রানের জুটি গড়েন। দিলশান ১৬১ রানে আর সাঙ্গাকারা ১০৫ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
বিশ্বমঞ্চের পুল ‘এ’র ম্যাচে শ্রীলংকা ও বাংলাদেশ মুখোমুখি হয়েছে। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের এ ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন লংকান দলপতি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। লংকানদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে ক্রিজে আসেন ৩১০টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলা দিলশান এবং ৯০ ওয়ানডে ম্যাচ খেলা লাহিরু থিরামান্নে।
ইনিংসের শুরুতে মাশরাফির করা প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই দারুণ সুযোগ এসেছিল টাইগার শিবিরে। লাহিরু থিরামান্নের একটি সহজ ক্যাচ লুফে নিতে ব্যর্থ হন প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো এনামুল হক বিজয়।
মাশরাফির আগুনে বোলিংয়ে প্রথম ওভার থেকে লংকার দুই ওপেনার নেন মাত্র এক রান। টাইগার দলপতির করা দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলেও অস্বস্তিতে পড়েন থিরামান্নে। শুধু তাই নয়, টাইগারদের সেরা এ পেসারের বলে আরও বেশ কয়েকবার বিপাকে পড়েন থিরামান্নে।
২২তম ওভারে সাব্বিরের পঞ্চম বলে উইকেটের পিছনে দায়িত্ব পালন করা মুশফিকুর রহিম থিরামান্নের একটি স্ট্যাম্পিং মিস করেন। এর আগেও থিরামান্নের একটি খোঁচা মুশফিক গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি।
অবশেষে কাঙ্ক্ষিত ব্রেক-থ্রু এনে দেন রুবেল হোসেন। দলীয় ১২২ রানের মাথায় থিরিমান্নেকে থার্ডম্যানে তাসকিনের তালুবন্দি করে ফেরান রুবেল। আউট হওয়ার আগে থিরামান্নে করেন ৭৮ বলে ৫২ রান।
এর আগে দিলশান ৫৯ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৩তম অর্ধশতক হাঁকান। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় অর্ধশতক। অবশেষে ডানহাতি এ ওপেনার তার অর্ধশতকটিকে শতকে রূপান্তর করেন। ৪১তম ওভারে গিয়ে ২১তম শতক হাঁকান দিলশান। ১১৫ বলে ১০টি চারের সাহায্যে দিলশান তিন অংকের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছান।
এর আগেই ৭৪ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১২তম অর্ধশতক হাঁকান থিরামান্নে। আর জীবন ফিরে পাওয়া সাঙ্গাকারা ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪০০তম ম্যাচে নেমে ৯৪তম অর্ধশতক হাঁকান। তিনিও এ অর্ধশতককে শতকে রূপান্তর করেন। ২২তম শতক হাঁকাতে ৭৩ বল খেলেন সাঙ্গা।
বাজে ফিল্ডিংয়ের খেসারত দেয় টাইগাররা। ৩৩তম ওভারে সাঙ্গাকারার ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি বোলিং প্রান্তে থাকা তাসকিন আহমেদ। ৪২ ওভারের প্রথম বলে রুবেল হোসেনের বলে সহজ ক্যাচ মিস করেন সাঙ্গাকারাকে দ্বিতীয়বারের মতো জীবন দান করেন মমিনুল হক।
শ্রীলংকার দলীয় শতক আসে ১২৬ বলে। পাওয়ার প্লে’তে তারা তুলে বিনা উইকেটে ৫১ রান। আর ২০ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯০ রান। ৩০ ওভার শেষে শ্রীলংকার দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় এক উইকেটে ১৪৭ রান। ২২৪ বলে দলীয় ২০০ আসে শ্রীলংকার। ৪০ ওভার শেষে লংকানদের দলীয় সংগ্রহ বেড়ে দাঁড়ায় এক উইকেট হারিয়ে ২১৭ রান।
বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলংকার মুখোমুখি হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এ ম্যাচের আগে টাইগাররা সর্বশেষ ৫ ম্যাচের ৫টিতেই জয় লাভ করেছে। অন্যদিকে, লংকানরা সর্বশেষ ৫ ম্যাচের দুটিতে জয় পেয়েছে। তবে, বিশ্বকাপের আসরে দুইবারের মুখোমুখি দেখায় দুটি ম্যাচই জিতেছে লংকানরা। আর ৩৭টি ওয়ানডে ম্যাচে শ্রীলংকার জয় ৩২টি, বাংলাদেশের জয় ৪টি, বাকি ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়।
বাংলাদেশ দল
তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, সৌম্য সরকার, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, মমিনুল হক ও তাসকিন আহমেদ।
শ্রীলংকা দল
তিলকারত্নে দিলশান, লাহিরু থিরামান্নে, দিমুথ করুণারত্নে, কুমারা সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, থিসেরা পেরেরা, দিনেশ রামদিন ও সুরঙ্গা লাকমল।