নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে রাতের বেলায় বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নাসিক নির্বাচনে দলীয় মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর কবির নানক। রাত পৌনে ৭টা থেকে পৌনে ৮টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ’র কক্ষে তারা এ বৈঠক করেন। কিন্তু বৈঠকটি দিনে না হয়ে রাতে হওয়ার খবরে নানা প্রশ্ন দেখা দেয় প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে।
খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান গণমাধ্যমকর্মীরা। স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, নির্বাচনকে প্রভাবিত করতেই গোপন এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে
বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচে গণমাধ্যমকর্মীরা জাহাঙ্গীর কবির নানকের কাছে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকে এখানে কোন গোপন বৈঠক করিনি। প্রধান ফটক দিয়েই ঢুকেছি এবং প্রধান ফটক দিয়েই বের হচ্ছি। ফলে এখানে লুকোচুরির কোনো বিষয় নেই।
তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ্বাস করি নির্বাচনটি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ এবং আনন্দ উৎসব ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে। এখানে সন্দেহের কোন কারণ নেই।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা একটি দল করি, দলের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে আছি। আমরা তো আসতেই পারি জেলা প্রশাসকের কাছে আলাপ করতে। যেন একটি সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়। কোনভাবেই যেন নারায়ণগঞ্জের শান্তি ভঙ্গ না হয়। এ ব্যাপারে তো আমরা আবেদন রাখতেই পারি।
নানক বলেন, শান্তিপূর্ণ ও আনন্দময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য যে কেন্দ্রগুলো ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সে কেন্দ্রগুলোতে যদি ঝুঁকির সৃষ্টি হয় তাহলে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় নেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনটি আনন্দ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমি কাউন্সিলর প্রার্থীদেরও অভিনন্দন জানাই। তারাও অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষা করেছে। এই পরিবেশের মধ্য দিয়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আশ্বস্ত করেছেন যে শুক্রবার থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক পরিমাণ সদস্য মাঠে থাকবেন। র্যাব পুলিশসহ সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে। যাতে কোন ধরনের শান্তি শৃঙ্খলা ব্যাঘাত না হয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, নির্বাচনকে প্রভাবিত করতেই গোপন এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারা ঢাকার মেহমান, নারায়ণগঞ্জের ভোটার নন। নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতেই এই বৈঠক করা হয়েছে।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, বৈঠকটি একটি অনির্ধারিত বৈঠক ছিল। বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা এসেছিলেন ঝুঁকিপূর্ণ বেশ ক’টি ওয়ার্ড ও কেন্দ্র’র বিষয়ে কথা বলতে। ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ড ও কেন্দ্রে যাতে আমরা অতিরিক্ত ফোর্স নিযোগ করি সেটি জানাতে। আমরা তাদের আশ্বস্থ করেছি।
এই বৈঠক নিয়ে নগরীতে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে বলে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, এটি নিয়ে সন্দেহ বা গুঞ্জনের কিছু নেই। তারা আসতেই পারেন। অনেকের সঙ্গেই আমরা নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে কথা বলেছি।
নির্বাচনের আগে রাতের বেলা প্রশাসনের সঙ্গে সরকারি দলের নেতাদের এ ধরণের বৈঠকের বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম সব শুনে বলেন, আমি সব কিছু না জেনে বুঝে এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাই না।
বৈঠকে দলের অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমও ছিলেন।