ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়িতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে অনেক যাত্রীর প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) ময়নাগুড়ির দোমোহনি এলাকায় লাইনচ্যুত হয় পটনা থেকে গুয়াহাটিগামী ১৫৬৩৩ আপ বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস।
ট্রেনটির বেশ কয়েকটি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে যায়। আহত অবস্থায় ইতিমধ্যেই ১৬ জনকে ময়নাগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক জানিয়েছেন, তার কাছে তিনজনের মৃত্যুর খবর রয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
পটনা থেকে গুয়াহাটিগামী ওই ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। দুর্ঘটনার পর ট্রেনটির ৪-৫টি কামরা একেবারে দুমড়েমুচড়ে গিয়েছে। একটি কামরার উপরে উঠে যায় আরেকটি কামরা। একটি কামরা পানিতেও পড়ে যায়। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দুর্ঘটনার সময় ট্রেনটির গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ট্রেনটির ইঞ্জিনের পর থেকে ১২টি কামরা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে সাতটি কামরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ওই ট্রেনটি ছাড়ার সময় তাতে প্রায় ৭০০ যাত্রী ছিলেন। পরে বিভিন্ন স্টেশন থেকে যাত্রীরা নামা-ওঠা করেন।
দুর্ঘটনার পরে রেললাইনের দু’পাশে ছড়িয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় যাত্রীদের। অনেকে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া কামরায় আটকেও পড়েন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। গ্যাস কাটার নিয়ে এসে কামরা কেটে যাত্রীদের বার করার চেষ্টা চলছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আলিপুরদুয়ার থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় উদ্ধারকারী দল। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটি থেকে অনেকেই নিজেই বের হয়ে এসেছেন। বাকিদের উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানিয়েছেন, আপাতত তিনজনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। ১০-১২ জন আহত যাত্রীকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অন্ধকার নেমে যাওয়ায় উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় আলো এবং জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মেডিক্যাল কলেজের দলও ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা