মানিকগঞ্জ: সবেমাত্র সাত দিন আগে নির্বাচন শেষ হয়েছে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে হারিয়ে জয়লাভও করেছেন। এলাকার মানুষজন নিয়ে জয়ের আনন্দ উপভোগ করতে না করতেই পুলিশ গ্রেপ্তার করলো এলাকায় চমক সৃষ্টি করা মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার গালা ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে তৃতীয়বারের মতো বিপুল ভোটে জয় পাওয়ায় বিএনপি নেতা শফিক বিশ্বাসকে।
নির্বাচনের দুদিন আগে প্রতিপক্ষ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাজিবুল হাসানের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও নির্বাচনে বিজয়ের সাতদিন পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। টানা তিনবারের চেয়ারম্যান শফিক বিশ্বাসকে গ্রেপ্তারের পর এলাকার মানুষ জনের মধ্যে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে বিএনপি নেতাকে এলাকার মানুষ তিন তিনবার বিপুল ভোটে নির্বাচন করেছেন।
শফিক বিশ্বাস রাজনীতিতে জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি।
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শফিক বিশ্বাসের পরিবারের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলকভাবে শফিক বিশ্বাসসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। কারণ ওরা জানতো শফিক বিশ্বাসের জনপ্রিয়তার কাছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নিশ্চিত ভরাডুবি হবে। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে সেই ভরাডুবি হয়েছে নৌকা প্রার্থীর। আড়াই হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মতো শফিক বিশ্বাস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
তার জনপ্রিয়তা এবং বিপুল ভোটে পরাজয়ের কারণে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সহ নেতাকর্মীদের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে।
যার কারণেই পূর্বের দায়ের করা মামলা এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরিবারটি আরো জানান, শফিক বিশ্বাস একজন রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তার দাদা প্রয়াত লতিফ বিশ্বাস ছিলেন সাবেক মন্ত্রী। নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাশ করা শফিক বিশ্বাসের বিএনপির রাজনীতিতে হাতে খড়ি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী হারুনার রশিদ খান মুন্নু। পাশাপাশি মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি আফরোজা খান রিতার অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনায় বিএনপির রাজনীতিতে শফিক বিশ্বাস ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
রাজনীতির মাঠ থেকে স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে পরপর তিনবার অংশ নিয়ে হ্যাটট্রিক চেয়ারম্যান হিসেবে এলাকায় রেকর্ড সৃষ্টি করেন।
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শফিক বিশ্বাসকে মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। তারা অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার করে শফিক বিশ্বাসের মুক্তি দাবি করেন।
এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গালা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ৫ই জানুয়ারি। নির্বাচনের আগে ২রা জানুয়ারি রাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাজিবুল হাসানের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয়। এই ঘটনায় রাজিবুল হাসান বাদী হয়ে ৩রা জানুয়ারি হরিরামপুর থানায় প্রতিপক্ষ গালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিক বিশ্বাস সহ ৫০ জন কে আসামি করে মামলা করেন। নির্বাচনের আগেই এই মামলায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো।
হরিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মিজানুর রহমান জানান, সুনির্দিষ্ট মামলার অভিযোগে বুধবার বিকেলে ঝিটকা বাজার থেকে ইউপি চেয়ারম্যান শফিককে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।