ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) পূর্ব নির্ধারিত কাওয়ালি কনসার্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ও দর্শনার্থী শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অংশের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এই কাওয়ালি সন্ধ্যা অনুষ্ঠান নিয়ে শুরু থেকে সবার মধ্যে এক ধরনের আগ্রহ ছিল।
বিকেলে কে বা কারা কাওয়ালি অনুষ্ঠানের ব্যানার ছিঁড়ে ফেললে সুন্দরভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শেষ মুহূর্তে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান মাইক ও সাউন্ড বক্স সরবরাহে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা পরে একটি মাইক সংগ্রহ করে অনুষ্ঠান শুরু করেন সংশ্লিষ্টরা। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে অনুষ্ঠানের মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করেন। এ সময় তারা বেশ কয়েক জনকে পিটিয়ে আহত করেন বলেও জানা যায়। হামলায় আয়োজকদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আয়োজকদের অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী নেতাকর্মীরা এ হামলা চালান। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও হামলায় অংশ নেন বলে তারা জানান।
তারা জানান, গত সপ্তাহে তারা টিএসসির পরিচালক আকবর হোসেনের অনুমতি নেন।
এরপর তাদের কার্যক্রম শুরু করেন। দিনের মধ্যে স্টেজের কার্যক্রম সম্পন্ন করলেও বিকেলে সাউন্ড সিস্টেমের কাজ শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু সাউন্ড সিস্টেমের দায়িত্বে থাকা একজন জানান, সাদ্দাম হোসেন তাকে নিষেধ করেছেন। পরে তারা অন্য জায়গা থেকে সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া করে আনেন। এর আগেই সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা এসে অনুষ্ঠানে হামলা করেন। এতে তাদের বেশ কয়েকজন আহত হন।
টিএসসির পরিচালক আকবরকে সাদ্দাম ফোন দিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন থেকে বিরত থাকতে বলেছেন আয়োজকেরা অভিযোগ করেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখার সাধারণ সম্পাদক মানবজমিনকে বলেন, ছাত্রলীগের হামলায় জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। অসৎ উদ্দেশ্যে এর সঙ্গে ছাত্রলীগের নাম জাড়ানো হচ্ছে।
অনুষ্ঠান আয়োজন না করতে কাউকে ফোন দেননি উল্লেখ করে সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা যতই হোক জেনেছি অনুষ্ঠানটি নিয়ে আয়োজকদের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব ছিল। অনুষ্ঠানটির শরীয়ত সম্মত হবে কিনা, গান বাজনা করা ইসলামে জায়েজ কিনা,মেয়েরা অনুষ্ঠানে থাকতে পারবে নাকি না এগুলো নিয়ে তাদের মধ্যে এক ধরনের মতবিরোধ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। সেখান থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে।
হামলার পরপরই এর প্রতিবাদে টিএসসি ভিত্তিক বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, বাম সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.গোলাম রব্বানী ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এলে শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন।