সরকারের পক্ষ থেকে প্রথমবার মৌখিক ঘোষণা এলেও এবার টিকা গ্রহণ না করা শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম তথা স্কুল-কলেজে না যাওয়ার লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার এক নির্দেশনা পাঠিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) জানিয়েছে, নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ১২-১৮ বছর বয়সী সব শিক্ষার্থীর টিকা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রায় সব শিক্ষার্থীর টিকাদান কার্যক্রম শেষ হবে এবং এরপর থেকেই টিকা না নেওয়া শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।
মাউশির নির্দেশনায় বলা হয়, ১২-১৮ বছর বয়সী সব শিক্ষার্থীকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে গত ৩০ ডিসেম্বর বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়। রাষ্ট্রের এ গুরুত্বপূর্ণ ও অগ্রাধিকার কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে নতুন করে নির্দেশনা দেওয়া হলো।
মাউশির নির্দেশনা:
১. ১২-১৮ বছর বয়সী সব শিক্ষার্থী (নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত) ভ্যাকসিন গ্রহণ করবে।
২. সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানপ্রধান ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনে শিক্ষার্থীদের টিকা কেন্দ্রে উপস্থিতি নিশ্চিত করবেন। একই সঙ্গে শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষককেও টিকা কেন্দ্রে পাঠাবো হবে।
৩. টিকা গ্রহণ ব্যতিত কোনো শিক্ষার্থী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
৪. টিকা কার্যক্রম চলমান অবস্থায় সব মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অঞ্চল, জেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবে না।
৫. জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয় করে ভ্যাকসিনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিশ্চিতে সচেষ্ট থাকবেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার সব পরিচালক, সরকারি ও বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সব অঞ্চলের উপপরিচালক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে প্রধান শিক্ষক এবং উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনার বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের এক কোটি ১৬ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৪৬ লাখের টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ শেষ হয়েছে। আশা করছি আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে বাকিরাও নিয়ে নেবে।
১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকার বিষয়টি নিশ্চিত করে স্কুলে যাওয়ার বিষয়ে কেবিনেট সেক্রেটারি নির্দেশনা দিয়েছেন উল্লেখ করে মাউশি মহাপরিচালক বলেন, আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি। ১৫ জানুয়ারির পর বিষয়টি (টিকা ছাড়া স্কুলে নয়) নিশ্চিত করা হবে।
গত ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, টিকা না নিয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাওয়া যাবে না। ১২ বছরের বেশি বয়সের শিক্ষার্থীদের অন্তত এক ডোজ টিকা নিয়ে স্কুল-কলেজে যেতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়া তো শেষ হয়নি- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ভ্যাকসিন এখন আমাদের গ্রাম-গঞ্জ পর্যন্ত অ্যাভেলেবল আছে। ভ্যাকসিন দিয়ে যদি স্কুলে যাওয়া সহজ হয় বা সে যদি সেভ থাকে, সেটির জন্য তো প্রমোশন ক্যাম্পেইন করা হবে।