ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীদের দাপট বেড়েই চলছে। গত রবিবার অনুষ্ঠিত চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে প্রায় নৌকার সমানসংখ্যক ইউনিয়ন পরিষদে জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের এসব বিদ্রোহী প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, গত রবিবারের ৮৩৬টির মধ্যে ৩৯০টি (৪৬%) ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। ৩৯৬টি (৪৭%) ইউনিয়নে জিতেছেন নৌকার প্রার্থী। এদের মধ্যে ৪৮ জন চেয়ারম্যান হয়েছেন বিনা ভোটে। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি ৭, ইসলামী আন্দোলন ২ ও জাকের পার্টির ১ জন প্রার্থী জয় পেয়েছেন। স্থগিত হওয়ায় বেশ কয়েকটি ইউপির ফল ঘোষণা করা হয়নি।
ইসির তথ্য অনুসারে, গত ২১ জুন প্রথম ধাপের ভোটে ২০৪টি ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগের ১৪৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী জয়ী হন। এরপর প্রথম ধাপের ২০ সেপ্টেম্বরের ভোটে ১৬০টি ইউপির মধ্যে নৌকার প্রার্থী জয় পান ১১৯টিতে। দুই ধাপ মিলিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয় পান ৮৫ জন। দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৩৩০টিতে জয় পান স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এ ধাপে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীরা জয় পান ৪৮৬টি ইউপিতে। তৃতীয় ধাপের ৯৯২টি ইউপির মধ্যে ৪৪৬টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হন। নৌকার প্রার্থীরা জয় পান ৫২৫ ইউনিয়নে।
এদের মধ্যে অবশ্য ৯৯ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
সব মিলিয়ে চার ধাপে ২ হাজার ৯৮৫টি ইউপির অনানুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা করেছে ইসি। এর মধ্যে ১ হাজার ৬৭৪টি ইউনিয়নে নৌকা এবং ১ হাজার ২৫১টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। অর্থাৎ, ৪১ দশমিক ৯০ শতাংশ ইউনিয়নে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। আগামী ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে ৭০৭টি ও ৩১ জানুয়ারি ষষ্ঠ ধাপে ২১৯টি ইউনিয়নে ভোট হবে।
১৯৭৩, ১৯৭৭, ১৯৮৩, ১৯৮৮, ১৯৯২, ১৯৯৭, ২০০৩, ২০১১ ও ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদে সাধারণ নির্বাচন হয়। এবার হচ্ছে দশম ইউপি নির্বাচন। এর মধ্যে নবম ও দশম ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট হচ্ছে দলীয় প্রতীকে। এবারের নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দল। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে পরিচিত।