বগুড়া: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জনগণ যখন কোনো সরকারকে চায় না তখন কোনো বিদেশী শক্তি তাকে রক্ষা করতে পারে না। যখন বিপদ আসবে পুলিশও তখন পাশে থাকবে না।
তিনি বলেন, জনগণই আমাদের শক্তি। সরকারকে বিদায় করতে পাড়া-মহল্লায় আন্দোলন গড়ে তুলুন। সাহস করে রাজপথে নামলে এ সরকার বিদায় নেবেই। তারেক রহমানের নেতৃত্বে শিগগিরই শেখ হাসিনা সরকারের পতন হবে, মুক্তি পাবেন গণতন্ত্রের মা, মানুষ ফিরে পাবেন ভোটাধিকারসহ সকল অধিকার।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে বগুড়া জেলা বিএনপির আয়োজনে শহরের নবাববাড়ি রোডস্থ জেলা কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গয়েশ্বর বলেন, ‘যারা ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে তাদের চোখে ঘুম নেই। মার্কিন সরকার কিছু সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যক্তিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এতেই তারা আতংকিত। সামনে আরো বড় কাদের নাম আসবে তা দেখার অপেক্ষায় জাতি।’
ক্ষমতাসীন দলের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গত ১২ বছরে অনেক অপকর্ম করেছেন, এখন জাতির কাছে ক্ষমা চান, বিএনপির সাথে ভালো ব্যবহার করুন। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আপনাদের সময় শেষ। সামান্য একটু ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবেন।’
বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান বক্তা চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু বলেন, অবৈধ নিশিরাতের সরকারের বিচার হবে জনগণের আদালতে।
বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
তারেক রহমানের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, যদি সরকার তা না করে তবে আপনি (তারেক রহমান) সরকার পতনের আন্দোলনের ঘোষণা দিন। সেই আন্দোলন বগুড়া থেকেই শুরু হবে। এবার তারেক রহমানের নেতৃত্বে হাসিনা সরকারের পতন হবে।
বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সদস্য আলী আজগর তালুকদার হেনার পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এ কে এম মাহবুবর রহমান, রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগাঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মো: সিরাজ, বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবকদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাংগাঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান প্রমুখ।
সমাবেশে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট এ কে এম সাইফুল ইসলাম, ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল, জয়নাল আবেদীন চাঁন, লাভলী রহমান, মাহবুবর রহমান বকুল, এম আর ইসলাম স্বাধীন, হামিদুল হক চৌধুরী হিরু, খায়রুল বাশার, মাফতুন আহমেদ খান রুবেল, মোশাররফ হোসেন চৌধুরী, তাহা উদ্দিন নাহিন, সহিদ উন নবী সালাম, মনিরুজ্জামান মনিসহ ছাত্রদল, যুবদল স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, শ্রমিকদলসহ অনান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে সমাবেশে জেলার ২৪টি সাংগঠনিক থানার ব্যানার, প্লাকার্ড হাতে নিয়ে মিছিল সহকারে নেতাকর্মীরা যোগ দেন। তাই সমাবেশ ঘিরে বগুড়া মিছিলের শহরে পরিণত হয়। সমাবেশে কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
সকাল ১১টার আগেই সমাবেশস্থল নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে উপচে পড়ে। তাই নবাববাড়ি রোডে স্থান না পেয়ে বহু নেতাকর্মী সার্কিট হাউজ রোড, শহীদ খোকন পার্ক রোড ও সাতমাথা এলাকায় অবস্থান নেন। বগুড়ায় বিএনপির আয়োজনে এটাই সাম্প্রতিককালের সর্ববৃহৎ জনসমাবেশ।