বেনজীরসহ ৭ কর্মকর্তা ও র‌্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

Slider টপ নিউজ


মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের অভিযোগে বিশ্বের ১০টি প্রতিষ্ঠান ও ১৫ ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। এ তালিকায় বাংলাদেশের র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং সংস্থাটির সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ ছয় কর্মকর্তার নামও আছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব দ্য ট্রেজারি অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল (ওএফএসি) এসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করেছে। এছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর র‌্যাবের সাবেক দুই কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যাদের একজন ট্রেজারি বিভাগের তালিকাতেও আছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান মোট সাত কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন র‌্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক তোফায়েল মুস্তাফা সারওয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার লতিফ খান ও র‌্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদ।

র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানানো হয়েছে। তার সঙ্গে র‌্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপরও যুক্তরাষ্ট্রে
প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

ট্রেজারি বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে বলা হয়, মাদকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের যুদ্ধে অংশ নিয়ে র‌্যাব আইনের শাসন ও মানবাধিকার খর্ব করেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ হুমকির মুখে পড়েছে।
এতে বলা হয়, যৌথ টাস্ক ফোর্স র‌্যাব ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং বর্ডার গার্ড সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত হয়। র‌্যাবের দায়িত্ব হলো-অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, অপরাধমূলক কার্যকলাপ সম্পর্কিত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং সরকার নির্দেশিত তদন্ত। তবে স্থানীয় এনজিওগুলোর অভিযোগ, বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ জনেরও বেশি লোকের নিখোঁজের পেছনে র‌্যাব ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দায়ী। ২০১৮ সাল থেকে তাদের হাতে প্রায় ৬০০টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- ঘটেছে। কিছু প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে ভুক্তভোগীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।

অন্যদিকে মিয়ানমারের বাগো রাজ্যের চিফ মিনিস্টার মায়ো সুই উইন, কাইন রাজ্যের চিফ মিনিস্টার সাও মিন্ত ও, মান্দালয় রাজ্যের চিফ মিনিস্টার মং কো এবং কাচিন রাজ্যের চিফ মিনিস্টার খাত হেন নানসহ দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোয়ার্টারমাস্টার জেনারেল অফিস (কিউজিও) ও সশস্ত্র সংরক্ষিত বাহিনী মিয়ানমার ওয়ার ভেটেরান্স অর্গানাইজেশনকে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এ ছাড়া চীনের জিনজিয়াং উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সাবেক চেয়ারম্যান শোহরত জাকির ও বর্তমান চেয়ারম্যান এরকেন টুনিয়াজও এ তালিকায় আছেন। নজরদারির জন্য চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সেন্সটাইম গ্রুপ লিমিটেডকেও এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া উত্তর কোরিয়ার কয়েকজন নাগরিক এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নামও স্থান পেয়েছে তালিকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *