সরকার খালেদা জিয়াকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যার পরিকল্পনা করছে : ফখরুল

Slider রাজনীতি

সরকার সুপরিকল্পিতভাবে খালেদা জিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে দলটির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী কৃষক দল এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিন। এটা ন্যূনতম একটা দাবি, কোনো দয়ামায়া নয়। সাধারণভাবে এটা একজন নাগরিকের সাধারণ অধিকার। দেশনেত্রীকে (খালেদা জিয়া) সচেতনভাবে তিলে তিলে হত্যা করা হচ্ছে। এ কথা আমরা বারবার বলছি।’

মির্জা ফখরুল জানান, দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠন, সচেতন নাগরিক সবাই বলছেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার সুযোগ দিন। তার যে রোগ হয়েছে, এভাবে যদি চলে তাহলে তিনি বেশি দিন বাঁচবেন না। বাংলাদেশে তার চিকিৎসার তেমন সুযোগ নেই। লিভার সিরোসিসের চিকিৎসা আমেরিকা, ইংল্যান্ড ও জার্মানিতে সবচেয়ে ভালো।

মির্জা ফখরুল জানান, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রকে মুক্তি ও প্রতিষ্ঠা করেছেন, দিয়েছেন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ। বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন। প্রথম ক্ষমতায় এসেই তিনি কৃষকদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়েছিলেন। বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল করেছিলেন। আর তারই ওপর এখনো বাংলাদেশ চলছে।

বর্তমান সরকার জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতায় রয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ বলেছিল, ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে, চাল আজ ৭০ টাকা। সারের দাম তিন গুণ বাড়িয়েছে। চাকরি দেয়ার কথা বলেছে, চাকরি তো দূরের কথা, ফুটপাতের হকার উচ্ছেদ করে জায়গা দখল করছে। গরিব আরো গরিব হচ্ছে। আর তারা আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম একটা নিরাপদ সরকারব্যবস্থা, যেখানে মানুষ ভোট দিতে পারবে। তারা চায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ভোট হবে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কখনো সুষ্ঠু ভোট হতে পারে না। স্থানীয় নির্বাচনে কত প্রাণ চলে গেল। কুমিল্লার কাউন্সিলর হত্যার তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের তিনজনকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। ক্রসফায়ার সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ। তারা চেয়েছিল যেন আসল অপরাধীর পরিচয় প্রকাশ না পায়।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়া অবিচ্ছেদ্য। তিনি এখনো কারাগারে আছেন, হাসপাতালে আছেন। এটি হচ্ছে তার এ দেশের গণতন্ত্র আবার ফিরিয়ে আনার জন্য সংগ্রাম। তিনি কখনো মাথা নোয়াননি।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, খালেদা জিয়ার মতো নেত্রীকে সরকার যদি বিদেশে চিকিৎসা নিতে যেতে না দেয়, তবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। মানুষের হৃদয়ের মধ্যে খালেদা জিয়া আছেন। সেখান থেকে কেউ তাকে কেড়ে নিতে পারবে না। দেশের কৃষকদের ঘর থেকে বের করে আনতে হবে। গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে, মুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হাসান জাফির। মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম।

মানববন্ধনে সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এ ছাড়া বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও মানববন্ধনে অংশ নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *