আধুনিক চিকিৎসা বলছে, নিয়মিত স্বাস্থ্যকর শারীরিক সম্পর্ক করলে শরীর-মন সুস্থ থাকে। আয়ু বাড়ে। কিন্তু আপনি জানেন কি, সাম্প্রতিক গবেষণায় পয়েন্ট ধরে ধরে শারীরিক সম্পর্কের উপকারিতা তুলে ধরা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই সময়ের প্রতিবেদনে ধাপে ধাপে এক ডজন উপকারিতা তুলে ধরা হয়েছে।
ওজন কমায়
ওজন নিয়ে বেশ চিন্তায় আছেন? নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক করুন। আধুনিক গবেষকরা বলছেন, নিয়মিত শারীরিক সম্পর্কে প্রচুর ক্যালোরি বার্ন হয়। জিম-যোগ ব্যায়ামের চেয়েও যা অনেক বেশি কার্যকরী। জিম করতে গিয়ে তো ঘেমে নেয়ে একসা হোন। তার চেয়ে সঙ্গীর সঙ্গে ইচ্ছে মতো শারীরিক সম্পর্ক করুন। আনন্দ করতে করতেই ক্যালোরি বার্ন করা যাবে। বিশেষ করে ৩০ বছরের পর থেকে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক ক্যালোরি বার্নে সাহায্য করে।
হার্টের রোগের সম্ভাবনা কমায়
হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা রুখতেও শারীরিক সম্পর্ক দারুণ কাজ করে। যৌনসঙ্গমের সময় রক্ত চলাচল দ্রুতহারে হয়। এর ফলস্বরূপ অনেক সময়ই হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক কিংবা হার্টের অন্যান্য অসুখ প্রতিরোধে কাজ দেয় নিয়মিত যৌন জীবন- বলছে গবেষণা।
সর্দি-জ্বর থেকে বাঁচায়
গবেষকদের দাবি, একেবারে শারীরিক সম্পর্কমুক্ত জীবনের পরিবর্তে যারা সপ্তাহে অন্তত ২ থেকে ৩ বার নিয়ম করে শারীরিক সম্পর্ক করেন তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। শরীরে অ্যান্টিবডি ইমিউনোপ্লোবিউলিন এ বা IgA তৈরি হয়। এই অ্যান্টিবডি সর্দি-ঠান্ডালাগা কিংবা জ্বর প্রতিরোধ করে।
মেনোপজ দূরে
নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক করলে নারীদের শরীরের হরমোনের সামঞ্জস্যতা বজায় থাকে। নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক মেনোপজকে দূরে সরিয়ে রাখে। মেনোপজ ধারে কাছে না আসা মানেই চনমনে জীবন।
ব্যথা কমায়
দৈনন্দিন কাজের চাপ, বয়স বৃদ্ধি ইত্যাদি নানা কারণে গায়ে-হাতে পায়ে, কিংবা মাথায় ব্যথা তো নিত্যদিনের সমস্যা। শারীরিক সম্পর্ক করুন, দেখবেন এসব ব্যথা আপনার জীবন থেকে পালিয়ে গেছে। শারীরিক সম্পর্কের সময় শরীর থেকে অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসৃত হয়। আর এটি শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া মানে স্বাভাবিক উপায়ে শরীর থেকে ব্যথা কমে যাওয়া।
ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধ
আধুনিক জীবনযাপন পদ্ধতি আমাদের অনেক রোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে। নারীদের ব্রেস্ট ক্যানসার যেন স্বাভাবিক হযে দাঁড়িযেছে। বিশ্বজুড়ে ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। মুত্যুর হারও নেহাত কম নয়। চিকিৎসায় শরীরের উপর ধকলও পড়ে মারাত্মক। আধুনিক গবেষণা বলছে নির্দিষ্ট সঙ্গীর সঙ্গে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কম করে।
প্রোস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধ
নারীরা যেমন ব্রেস্ট ক্যানসারে কাতর, তেমনই পুরুষদের প্রস্টেট ক্যানসার ভয়ানক ভীতির কারণ। ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সী পুরুষদের উপর গবেষণা করে দেখা গেছে যে, নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক করলে পুরুষদের প্রস্টেট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। গবেষকরা বলছেন পুরুষদের দিনে অন্তত একবার বীর্যপাত করা প্রয়োজন। এটি কোনও মানসিক বিকৃতি নয়, শারীরিক প্রয়োজন।
মূত্রাশয়ের রোগ প্রতিরোধ
প্রস্টেটের মতো ব্ল্যাডার বা মূত্রাশয়ের রোগ প্রতিরোধেও নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক সাহায্য করে। মূত্রথলি, মূত্রনালিসহ সংলগ্ন এলাকার মাংসপেশীকে সচল রাখে। শরীর সুস্থ থাকে।
স্ট্রেস এবং রক্তচাপে ধন্বন্তরী
নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক স্ট্রেস কমায়। আজকের ইঁদুর দৌড়ের জীবনে যা অত্যন্ত প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, লো ব্লাড প্রেশারের সমস্যাও নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক সেরে যেতে পারে। নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক করলে ভালো ঘুম হয়। আর ভালো ঘুম মানেই চিন্তামুক্ত মন।
মন ভালো করে
ভালো ঘুম হলে, শরীরে রক্ত চলাচল ভালো হলে কিংবা স্ট্রেস কমে গেলে মন যে ভালো থাকবে তা তো স্বাভাবিক। নিয়মিত সেক্স মন তো ভালো করেই পাশাপাশি মুড সুইং-এর সমস্যাও দূর করতে সাহায্য করে। কাজে উৎসাহ আসে। সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়।
গর্ভধারণজনিত সমস্যার ঝুঁকি কমায়
গর্ভবতী মহিলাদের উচ্চরক্তচাপ জনিত সমস্যা খুব কষ্ট দেয়। এর ফলে অনেক সময়ই শরীরের কিছু কিছু অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এর পোশাকী নাম প্রিক্ল্যাম্পশিয়া। কিন্তু নিয়মিত সেক্স করলে প্রিক্ল্যাম্পশিয়ার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায় অনায়াসে।
গন্ধ অনুভবের ক্ষমতা বাড়ায়
লাস্ট বাট নট দ্য লিস্ট, শুনতে অবাক লাগলেও নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক করলে গন্ধ অনুভূতির ক্ষমতা নাকি বৃদ্ধি পায়। আধুনিক গবেষকরা অন্তত এমনই দাবি করছেন। আচ্ছা তাহলে কি করোনা পরীক্ষার জন্য যৌনতাকে কাজে লাগানো যায়? না এমন উটকো প্রশ্নের উত্তর গবেষকরা দেননি।