নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের সহিংসতায় মাসুদ মিয়া নামের এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন। তিনি উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্রপ্রার্থী (চেয়ারম্যান) ভিপি মারুফের সমর্থক ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে ওই ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মাসুদ তার ভাগ্নিকে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়ে খাগাতুয়া ভোরের বাজারের দিকে যান। পরে চা খাওয়ার সময়, ৩টি সিএনজি যোগে নৌকার সমর্থক অ্যাডভোকেট রব মিয়া, শফিক মিয়া, আলম মিয়া, ফজু ও লিটন মিয়ার নেতৃত্বে একদল যুবক এসে ধারালো অস্ত্র নিয়ে সেখানে আসেন। একপর্যায়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে মাসুদকে রক্তাক্ত অবস্থায় সিএনজি যোগে উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে খাগাতুয়া পশ্চিম পাড়া কবরস্থান সংলগ্ন নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্পের সামনে দ্বিতীয় দফায় কুপিয়ে তার হাত ও পায়ের রগ কেটে গুরুতর আহত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দিয়ে যায়। এদিকে স্থানীয় ও পরিবারের লোকজন মাসুদকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নবীনগর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে এলে তার অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ঢাকা নেয়ার পথে দুপুরে মাসুদ মারা যান। মাসুদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে যাওয়ার পরপরই এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রতনপুর ইউনিয়নে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রতনপুর ইউনিয়নে সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম আতঙ্ক।
প্রত্যক্ষদর্শী মাসুদের ভাগ্নি শারমিন আক্তার জানান, ‘আমি এবং আমার মায়ের চোখের সামনে অ্যাডভোকেট রব মিয়া, শফিক মিয়া ও আলমসহ কয়েজন সন্ত্রাসী সিএনজি দিয়া আইসা আমার মামাকে কুপিয়ে সিএনজি দিয়ে পশ্চিম পাড়া শাকিল মিয়ার নৌকার অফিসের সামনে আবার কুপায়ছে, পরে এই বাজারে অটু রিকশা দিয়া আইন্না ফালাই গেছে। আনারস মার্কার নির্বাচন করার কারণে আমার মামারে খুন করেছে।’
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ভিপি মারুফ জানান, আমার জনপ্রিয়তায় ঈশ্বার্ণীত হয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন বুধবার রাতে মিটিং করে আমার কর্মী মাসুদের উপর পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালিয়ে তাকে নিশংসভাবে খুন করেছে। প্রতিপক্ষের লোকজন আমার কর্মী-সমর্থকের উপর বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে নৌকার প্রার্থী শাকিল বলেন, এই ঘটনায় অবশ্যই কঠিন বিচার হওয়া উচিত, কোনো সন্ত্রাসী এবং মাদকসেবীকে আমি আশ্রয়-প্রশ্রয় দেই না। মারামারি কাটাকাটি পছন্দ ও সমর্থন করি না। এই ঘটনার সাথে আমার কোনো কর্মী সমর্থক জড়িত না। এইটা তাদের পূর্ব বিরোধের জের ধরে ঘটেছে।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুর রশিদ বলেন, এটা একটি বিচ্ছিন ঘটনা। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক বলেন, এ ঘটনায় আমি অবগত হয়েছি এবং সাথে সাথে ওসি এবং সার্কেলকে জানিয়েছি। তদন্ত স্বাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। নবীনগরে নির্বাচন হবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তার কোনো বিকল্প আমরা ভাবছি না।