বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ আটজনের বিরুদ্ধে তদন্তাধীন মোসারাত জাহান মুনিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন আগামী ২১ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার মামলাটিতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এদিন প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াছমিন আরা নতুন এ তারিখ ঠিক করেন।
মামলায় মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ২ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছেন। গত ৬ সেপ্টেম্বর মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ আটজনকে আসামি করে ঢাকার ৮ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এই মামলা করেন। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল গুলশান থানার ওসিকে অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত ভার দেওয়ার নির্দেশ দেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন-আনভীরের বাবা আহাম্মদ আকবর সোবহান, মা আফরোজা, স্ত্রী সাবরিনা, আনভীরের গার্লফ্রেন্ড সাইফা রহমান মিম, মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা, মুনিয়ার বাড়িওয়ালা ইব্রাহিম আহমেদ রিপন ও রিপনের স্ত্রী শারমিন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মোসারাত জাহান (২১) মিরপুর ক্যান্ট. পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। ঘটনাচক্রে ভিকটিমের ওপর আসামি সায়েম সোবহান আনভীরের (৪২) চোখ পড়ে। সে ভিকটিমের রুপ লাবণ্যে মোহিত হয়ে এবং একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ভিকটিম মুনিয়াকে তার কলেজের হোস্টেল থেকে ২০১৯ সালের জুন মানে রাজধানীর বনানীতে ৬৫ হাজার টাকা ভাড়ায় একটি ফ্ল্যাট বাসায় নিয়ে আসে এবং ৭/৮ মাস তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে আসছিল।
গত ১ মার্চ পুনরায় বিয়ের প্রলোভন দিয়ে মুনিয়াকে কুমিল্লা থেকে গুলশানে মাসিক এক লাখ ৩০ হাজার টাকার ভাড়া বাসায় নিয়ে আসে আনভীর। বাসায় একা রেখে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও বিয়ের প্রলোভনে তাকে ধর্ষণ করে। এতে মুনিয়া ২/৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ পর্যায়ে মুনিয়া আনভীরকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরপর গত ২৬ এপ্রিল দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে মুনিয়াকে হত্যা করা হয়। পরে ওড়না পেঁচিয়ে শোয়ার ঘরের সিলিংয়ে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা সাজানোর চেষ্টা করা হয়।
উল্লেখ থাকে, এর আগে মুনিয়াকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে আনভীরকে আসামি করে গুলশান থানায় মামলা করেন নুসরাত জাহান। গত ১৯ জুলাই বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। গত ১৭ আগস্ট পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দাখিল করলেও গত ১৮ আগস্ট ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী নারাজির আবেদন নাকচ করে আসামি আনভীরকে অব্যাহতির আদেশ দেন