তিনটি প্রস্তাব নিয়ে আগামীকাল রোববার স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৬) যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।প্রস্তাবগুলো হলো- বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি সীমিত রাখা, জলবায়ু তহবিলের কার্যকর বাস্তবায়ন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাড়াতে সহযোগিতা বাড়ানো।আজ শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপের তিন দেশে প্রধানমন্ত্রীর সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি জানান, তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনতে ‘ন্যাশনালি ডিটারমিন্ড কনট্রিবিউশনস (এনডিসি)’ ঠিক করা, ১০০ বিলিয়ন ডলারের জলবায়ু তহবিলের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাড়াতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয় সম্মেলনে তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া ১৩ দিনের এই সফরকালে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যও সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি শেখ হাসিনা এবারের জলবায়ু সম্মেলনে ঝুঁকির মুখে থাকা ৪৮ দেশের জোট ‘ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ)’ চেয়ারপারসন হিসেবেও যাচ্ছেন। গ্লাসগোয় ৩১ অক্টোবর থেকে ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে জাতিসংঘের কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজের (কপ) ২৬তম আয়োজন। ১ ও ২ নভেম্বর সম্মেলনের শীর্ষ বৈঠকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। বক্তব্য দেবেন প্রথমদিনেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বলেছি, প্রত্যেক দেশ তাদের এনডিসি এমন জোরালোভাবে তৈরি করবে, যাতে পর্যায়ক্রমে আমাদের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে থাকে। এখন দুই ডিগ্রির মতো হয়ে যাচ্ছে, এটা কমাতে হবে। বিশেষ করে শিল্পোন্নত দেশকে এক্ষেত্রে ভূমিকা নিতে হবে। কারণ ৮০ ভাগ কার্বন নিঃসরণ করে জি২০ দেশ। তারা যাতে জোরালোভাবে কাজ করে, এমিশনটা কমে।’
১ নভেম্বর সিভিএফ ও কমনওয়েলথের একটি যৌথসভা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে প্রধান অতিথি থাকবেন শেখ হাসিনা। একইদিন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের আমন্ত্রণে ‘অ্যাকশন অ্যান্ড সলিডারিটি- দ্য ক্রিটিক্যাল ডিকেইড’ শীর্ষক সভায়ও তিনি অংশ নেবেন।
সিভিএফ সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ কপ-২৬ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অধিকার আদায়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে বলে দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। তিনি বলেন, এবারের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ‘সিভিএফ-কপ-২৬ লিডার্স ডায়ালগ’ অনুষ্ঠিত হবে।
গ্লাসগোতে ব্যস্ততম দুদিন পার করে ৩ নভেম্বর ছয়দিনের লন্ডন সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরকালে ওয়েস্টমিনস্টারে যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের সদস্যদের উদ্দেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভাষণ দেবেন তিনি। লন্ডনে বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আয়োজিত বিনিয়োগ সম্মেলনে তিনি ভার্চুয়ালি অংশ নেবেন। লন্ডন থেকে ফ্রান্স সরকারের আমন্ত্রণে এবং ইউনেস্কোর আয়োজনে যোগ দিতে ৯ নভেম্বর প্যারিস সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।