গাজীপুর: রংপুরের পীরগঞ্জে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার অন্যতম হোতা সৈকত মন্ডল ও তার সহযোগী রবিউল ইসলামকে টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং-এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টায় কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী এবং রংপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় স্বার্থন্বেষী মহলের অপতৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। এ ছাড়া সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির অপচেষ্টা করছে চক্রান্তকারীরা। এ সংক্রান্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাবের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাবের বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের অভিযানে প্রায় ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করে ইতোমধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১৭ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্টকে কেন্দ্র করে রংপুরে পীরগঞ্জের বড় করিমপুর গ্রামে দুর্বৃত্তরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের অভিযোগে রংপুরে পীরগঞ্জ থানায় তিনটি মামলা দায়ের হয়। এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১৩ এর একটি আভিযানিক দল শুক্রবার রাতে টঙ্গী এলাকা হতে পীরগঞ্জে হামলা ও অগ্নিসংযোগের অন্যতম হোতা মো. সৈকত মন্ডল (২৪) ও তার সহযোগী মো. রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অরাজকতা তৈরির ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের লক্ষ্যে হামলা-অগ্নিসংযোগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার এবং মাইকিং করে হামলাকারীদের জড়ো করে বলে জানায়।
গ্রেপ্তারকৃত সৈকত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে স্থানীয় জনসাধারণকে উত্তেজিত করে তোলে। এ ছাড়াও সে এই হামলা ও অগ্নিসংযোগে অংশগ্রহণে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করে। তার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণ করে বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। সে গ্রেপ্তারকৃত রবিউলকে মাইকিং করে লোকজন জড়ো করতে নির্দেশনা দিয়েছিল বলে জানায়, যোগ করেন খন্দকার আল মঈন।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত সৈকত মন্ডল রংপুরের একটি কলেজের স্নাতকে অধ্যয়নরত। সে রংপুর পীরগঞ্জের হামলা ও অগ্নিসংযোগের অন্যতম হোতা। সে বিভিন্ন সময়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন উসকানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর পোস্ট প্রদান ও শেয়ার করতো।
আপরদিকে, রবিউল রংপুরের পীরগঞ্জের হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অন্যতম উসকানিদাতা। সে উক্ত হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পূর্বে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মাইকিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন উসকানিমূলক ও মিথ্যাচার করে গ্রামবাসীকে উত্তেজিত করে তোলে ও হামলায় অংশগ্রহণের জন্য জড়ো হতে বলে। অতঃপর সে মাইকিং এর দায়িত্ব তার আস্থাভাজনকে প্রদান করে নিজে স্বশরীরে অংশগ্রহণ ও নির্দেশনা প্রদান করেছে।