তামিম-এনামুলে সূচনা, ১১ ওভারে ৩৮ জয় দিয়েই শুরু চায় বাংলাদেশ

Slider খেলা

64288_mz
ঢাকা: আফগানিস্থানের বিরুদ্ধে টসে জিতে ব্যাটিং সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাটিং উদ্বোধন করতে আসেন ১৩৬ ম্যাচ খেলা বাঁহাতি ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল এবং ২৮ ম্যাচ খেলা ডানহাতি ওপেনার এনামুল হক বিজয়। ২ টি ৪ সহ ৩১  বলে এ পর্যন্ত তামিম করেছেন ১৫ রান অন্যদিকে এনামুল হক করেছেন ৩৫  বলে ২০  রান

অন্যের খেলা দেখেই চারদিন পার। এবার নিজেদের খেলা দেখার পালা। আজ আমাদের খেলা দেখবো আমরা। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু আজই। এ দেশের কোটি ক্রিকেটপ্রেমীই নয়, বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা বাংলাদেশীদের জন্যই বিশেষ দিন
আজ। অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরার মানুকা ওভালেও এবারের প্রথম খেলা এটি। বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হবে খেলাটি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পরিম-লে এখনও শৈশব পেরোতে পারেনি। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের মান বণ্টনে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক পেছনে তারা। বাংলাদেশের এটি চতুর্থ বিশ্বকাপ আর আফগানদের প্রথম। ৭ দলের গ্রুপে আইসিসির সহযোগী দেশ আছে আরও একটি, স্কটল্যান্ড। প্রতিটি গ্রুপ থেকে চারটি করে দল খেলবে দ্বিতীয় রাউন্ড বা কোয়ার্টার ফাইনালে। বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ লক্ষ্য বলতে ওই চার দলের মধ্যে থাকা। তাতেই খুশি সবাই। লক্ষ্য ছোট তবে খুব সহজ নয়, আবার অসম্ভবও নয়। এ লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশকে অন্তত তিনটি খেলায় জিততেই হবে। তারপরও কথা থাকতে পারে। তবে দুই সহযোগী দেশের বিপক্ষে জিততে পারাটা বাংলাদেশের জন্য অবশ্য কর্তব্য। এদেরকে হারাতে না পারলে লক্ষ্য যেমন অর্জন-অসম্ভব হবে তেমনি লজ্জারও সীমা থাকবে না। বাংলাদেশের ক্রিকেটার ও সাপোর্টার সবার জন্য আজ তাই ডাবল চ্যালেঞ্জ। সামনে এগুনো আর লজ্জা বাঁচানো। আরও একটি বিষয় আজকের খেলার আগে বাংলাদেশের সবার মনে লুকিয়ে আছে। তা হলো প্রতিশোধের আগুন। না, তালেবানি কোন বিষয় নয়। বিষয়টি হারের বদলা নেয়া। প্রায় এক বছর আগে বাংলাদেশের মাটিতেই আফগানিস্তান বাংলাদেশকে হারের লজ্জায় ডুবিয়ে গেছে এশিয়া কাপ ক্রিকেটে। দু’দলের সেটিই ছিল প্রথম এবং একমাত্র সাক্ষাৎ। আজ যদি বাংলাদেশ জিততে না পারে তবে লজ্জাটা কোথায় যাবে বুঝতেই পারছেন।
গত বছরের আগে একবাক্যে সবাই বলতেন আফগানদের বিপক্ষে হারের প্রশ্নই ওঠে না। বাংলাদেশ দলও এখন পাকিস্তানের মতো ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ হয়ে যাওয়াতেই যত সমস্যা। বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা কখন যে কি রকম খেলবেন তা বলা যায় না। এ ভাল তো এই মন্দ। ধারাবাহিকতা খুঁজে পাওয়া ভার। না হয়, আফগানিস্তান কোনভাবেই বাংলাদেশের সমকক্ষ নয়। কাগজে-কলমে অনেকে এগিয়ে মাশরাফি-মুশফিক-সাকিব-তামিমেরা। অভিজ্ঞতার ঝুলি অনেক সমৃদ্ধ তাদের। কেউ কেউ তো তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে নামছেন। অভিজ্ঞতার মূল্য কি তা কিন্তু দু’দিন আগেই আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেটাররা তারুণ্যনির্ভর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বুঝিয়ে দিয়েছে হারের স্বাদ পাইয়ে। স্কটল্যান্ডও কাল দেখিয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ডকে যে ‘ছোট বলে কাউকে হেলা করতে নেই’।
বাংলাদেশের জন্য এ আসরে বড় চ্যালেঞ্জ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের আবহাওয়া আর পিচের প্রকৃতি। উপমহাদেশের স্পিন সহায়ক পিচ নেই সেখানে। দ্রুতগতির বোলারদেরই সাফল্য সম্ভাবনা বেশি। স্পিনাররা যে উইকেটবঞ্চিত থাকছেন তা নয়। এজন্য প্রয়োজন হবে মুন্সিয়ানার। বাংলাদেশের স্পিনাররা বিশেষ করে সাকিব আল হাসান অনেক দেশের মাটিতে খেলার অভিজ্ঞতাপুষ্ট এবং সফলও। তাই তার প্রতি সবার আলাদা নজর আর প্রত্যাশা। তবে স্পিনে আফগান ব্যাটসম্যানরাও কিন্তু দুর্বল নয়। তারাও উপমহাদেশের খুব বাইরের দল নয়। তারপরও বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা আজ মাঠে নামবে ফেভারিট হিসেবেই। আর এটারও প্রমাণও তাদের দিতে হবে। সংশয়ের কারণ তাদের সাম্প্রতিক নৈপুণ্য। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে বাংলাদেশ যে চারটি প্রস্তুতি ম্যাচে খেলেছে তার সবকটিতেই হেরেছে। এমনকি আয়ারল্যান্ডের কাছেও। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কেউ তাদের ব্যাটে স্বাভাবিক সুর তুলতে পারছেন না। কেবল পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিম আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ কিছুটা রান পান। বাকিরা কেউ নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। অধিনায়ক ও কোচের প্রত্যাশা আসল খেলায় সবাই ভাল করবেন। প্রত্যাশা তো সবারই থাকে- প্রমাণ করতে হয় খেলোয়াড়দের। তারা যদি তাদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে পারেন তবে আফগানিস্তানের পারার কথা নয়। আজকের খেলায় জয় বাংলাদেশের জন্য অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। এ জয় বাংলাদেশ দলকে চাঙা রাখবে সামনের খেলাগুলোতে। না হয়, আরও মিইয়ে পড়বে তারা। গতকাল সংবাদ সম্মেলনেও অধিনায়ক মাশরাফির কণ্ঠে একটি কথাই উঠে আসে ‘আমাদের লক্ষ্য কেবল জয়ই। দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে তারই নেতৃত্ব দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু পায়ের চোট তার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। এবার তারই আগ্রাসী নেতৃত্বে নতুন দিগন্তের প্রতীক্ষায় সবাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *