মোঃ জাকারিয়া/ ইসমাইল হোসেন, গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর এলাকায় তিনিটি প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় ২০জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে দুই প্ল্যাটুন বিজিবি সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ বৃহসপতিবার গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর বাজার এলাকায় সকালে দূর্বৃত্তরা তিনটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাংচুর করেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় ২০ জনকে আটক করেছে।
কাশিমপুর বাজারের পালপাড়া শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কাশিমপুর পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবুল রুদ্র জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার সময় কিছু লোক লাঠিসোটা নিয়ে শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে ঢুকে হামলা চালায়। তারা লক্ষী ও অসুরের প্রতিমা ভাংচুর করে চলে যায়।
একইদিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কাশিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার ব্যবসায়ি সুবল দাসের পারিবারিক মন্দিরে এবং স্থানীয় পালপাড়া নামাবাজার সার্বজনীন মন্দিরে হামলা চালায়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় ও জেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে।
খবর পেয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এডঃ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম ও গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশ ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০ জনের মতো লোককে গ্রেপ্তার করেছে।
কোনাবাড়ি জোনের সহকারি পুলিশ কমিশনার মো. বেলাল হোসেন জানান, সকাল ১১টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযান অব্যহত আছে। তবে হামলার কারণ এখন জানা যায়নি।
এদিকে গাজীপুর জেলা প্রশাসক তার ফেসবুক পেইজে বলেন, আজ ১৪/১০/২০২১ তারিখ সকাল ৭:০০টা থেকে ৭:৩০টার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকার কাশিমপুর থানাধীন ৩টি পূজা মন্ডপে (কাশিমপুর পালপাড়া পূজা মন্দির, সুবেলের বাড়ি পূজা মন্ডপ এবং শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ মন্দির) এ কতিপয় দুষ্কৃতিকারী ভাঙচুর করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। এতে ৩টি পূজা মন্ডপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিরাপত্তা বাহিনী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় অধিবাসীদের সহায়তায় অপকর্মে লিপ্ত ২০জন দুষ্কৃতিকারীকে আটক হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে। অন্যান্যদের আটকের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকান্ড অব্যাহত রয়েছে।
সকালে জনাব খন্দকার লুৎফুল কবীর, পুলিশ কমিশনার, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং জনাব এস. এম. তরিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক, গাজীপুর মহোদয় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় জেলা প্রশাসন, গাজীপুর, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ এর কর্মকর্তাগণ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের সাথে ছিলেন। এসময় এডভোকেট সুদেব চক্রবর্তী, সভাপতি, পূজা উদযাপন পরিষদ, গাজীপুরসহ সনাতন ধর্মের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিগণ এবং সাধারণ পূজারী উপস্থিত ছিলেন। পরিস্থিতি যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য মেট্রোপলিটন এলাকা এবং মেট্রোপলিটন এর বাইরের এলাকার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিজিবি ফোর্স মোতায়েনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, প্রতি মন্ডপে পুলিশ ফোর্সের পাশাপাশি স্থায়ী আনসার সদস্যসহ আনসারের টহল পার্টি মোতায়েন রয়েছে। জেলা প্রশাসন, গাজীপুর এর এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা রক্ষা ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কাজে নিযুক্ত রয়েছেন।