গাজীপুর: আমার জীবন গেলেও আমি কোন অপরাধী ও অন্যায়কারীর কাছে মাথা নত করব না। আমার বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের নাম প্রকাশ পেয়েছে। আমার টাকা নিয়ে চোখের চিকিৎসা করা যদি হালাল হয়, আমার টাকায় যদি বাড়ি করা হালাল হয়, আমার রক্তের কামায়ের টাকা নিয়ে প্রতিদিনের বাজার করে খেতে যদি হালাল হয় তবে আমি খারাপ হলাম কি করে! যারা টাকা নিয়েছে তারাই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
আজ শনিবার গাজীপুর সিটি মেয়র তার বাসভবনে কাউন্সিলদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির ভাষনে গাজীপুর সিটি মেয়র আলহাজ্ব এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, আমি দেশের বাইরে গিয়েছি তারা আমার কাছ থেকে নেওয়া টাকা দিয়ে মানুষকে রাস্তায় উস্কে দিয়েছে। মুনাফেক ছাড়া এ ধরণের কাজ অন্য কেউ করতে পারে না। আমি যদি খারাপ হতাম, দুই বছর আগে, এক বছর আগে, ছয় মাস আগে মুখ খুললেন না কেন। ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সবইত আপনাদের বাসায় বসে বসে হয়েছে। কিভাবে কোন সাহসে একজন মানুষের বাড়ির বেডরুমে ক্যামেরা পাঠান। এটা কোন ভদ্রলোক পাঠাতে পারে না । এটাত জানোয়ারের চেয়ে খারাপ হতে পারে। মোশতাকের চেয়ে খারাপ হতে পারে। আমি রাষ্ট্রের কাছে বিচার চাইব। আমার বেডরুমে আমার মিটিং রুমে কিভাবে ক্যামেরা পাঠায়। আমি তার বিচার চাই।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাকে মারার জন্য, আমার পরিবারকে মারার জন্য, মেয়রের ইজ্জত মারার জন্য, আওয়ামীলীগের ইজ্জত মারার জন্য, আমি রাষ্ট্রের কাছে বিচার চাই। প্রত্যেক নগরিকের তার ঘরের মধ্যে স্বাধীনভাবে বসবাস করার এখতিয়ার আছে। কোন আইনে কোন ধারায় তারা এ কাজটি করতে পারে, আমি রাষ্ট্র, সরকার ও আমার পার্টির কাছে বিচার চাই। আমি বলব আমাকে মারার জন্য তারা বিভিন্নভাবে পরিকল্পনা করছে। ২০১২, ২০১৩ সালে ৮ বছর আগে যারা আমাকে খুন করতে চেয়েছিল তারা এখনো সজাগ আছে। তারা আমাকে খুন করতে চায়।
তিনি বলেন, আমি মেয়র হওয়ার পর আমার বাড়ির দরজা খোলা। রাত দিন নগরবাসী আমাকে যেন পায় সেজন্য আমার বাড়িতে কোন গেইট বন্ধ রাখিনি। কাউন্সিলর, ঠিকাদার, লেভার ও সুইপার সবাইকে সাথে নিয়ে রাত দিন কাজ করছি, কিভাবে নগরের উন্নয়ন করা যায়। এই রাস্তাঘাট পরিস্কার করতে গিয়ে আমি শত্রু হয়েছি কাল হয়েছি। আপনারা আমার বিরুদ্ধে লাগছেন রাজনীতির নামে অপরাজনীতি দিয়ে আপনারা মেয়র কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে লাগছেন । আপনারা নির্বাচন করবেন করেন। জনগণ ভোট দিলে আপনারা নির্বাচিত হবেন জনগণ ভোট না দিলে আপনারা নির্বাচিত হবেন না। লুটপাট ও ভোট চুরি করে গাজীপুর সিটিতে নির্বাচিত হতে পারবেন না।
গাজীপুর সিটি মেয়র আরো বলেন, আমি নগরের উন্নয়নের জন্য বিদেশে গিয়েছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রীও দেশের বাইরে ছিলেন। এই সুযোগে আপনারা উস্কে দিয়ে মানুষকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছেন। সময় মত জবাব দেয়া হবে উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আগামী সপ্তাহ থেকে ওয়ার্ড অফিসের অনুমতি ছাড়া কোন কিছুই করা যাবে না। কোন অন্যায়কারী ও গিবতকারীকে নগর ভবনে ঢুকতে দেয়া হবে না।
করোনা থেকে মুক্ত হওয়ায় আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায়ের জন্য সকল কাউন্সিলরদের সহ সংশ্লিষ্টদের হজে যাওয়ার ঘোষনা দেয়ার পর তার বিরুদ্ধে ক্যাসেট তৈরী করে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
হুসিয়ারী উচ্চারণ করে মেয়র বলেন, এখন থেকে আইন অনুসারে অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকার আহবান জানান। মেয়র সকলকে নিয়ে একটি সুন্দর ও নিরাপদ নগর গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার অভিভাবক উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, আমি কাজ করছি। তিনি যখন সরে যেতে বলবেন আমি সরে যাবো। এ ছাড়া কারো কথায় কারো ষড়যন্ত্রের জন্য আমি সরে যাব না। তিনি মিথ্যা ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সকলকে সজাগ থাকার জন্য অনুরোধ করেন।