লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন বা মজুদ করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রেখে ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ বিল-২০১৫ পাস করা হয়েছে। আজ সংসদে বানিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বিলটি পাশের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাশ হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে বিলটি পাসের আগে জনমত-যাচাই ও বাছাই-কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব কন্ঠভোটে নাকচ হয়। গত ২১শে জানুয়ারি সংসদে এই বিলটি উত্থাপন করা হয়। পরে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ, বিক্রি ও ব্যবহার করা যাবে না। যারা লাইসেন্স পাবেন, তারাও চাওয়া মাত্র কর্তৃপক্ষকে ফরমালিন কেনা- বেচার হিসাব দেখাতে বাধ্য থাকবেন। লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন বা মজুদ করলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদ- ও ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে আইনে। লাইসেন্সের শর্ত ভাঙলে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদ- এবং ৫ লাখ টাকা অর্থদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন পরিবহন করলে ৬ মাস থেকে ২ বছরের কারাদ- এবং ১ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা অর্থদ- দেয়া যাবে। ফরমালিন উৎপাদনে ব্যবহার করা যায় এমন যন্ত্রপাতি রাখলেও দন্ডের বিধান রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে ৬ মাস থেকে ২ বছরের কারাদ- এবং ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ কমিটি গঠনের কথাও বলা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে- ফরমালিন, ফরমালডিহাইড, প্যারাফরমালডিহাইড বা এর যে কোন মাত্রার সলিউশন বা দ্রবণ এবং সরকার নির্ধারিত ফরমালিন উৎপন্নকারী অন্য কোন রাসায়নিকের ক্ষেত্রে এ আইন প্রযোজ্য হবে। লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানে পরোয়ানা ছাড়াই তল্লাশি চালাতে পারবে কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান শর্ত ভাঙলে লাইসেন্স বাতিলও করা যাবে। এ সম্পর্কিত অন্যান্য অপরাধ প্রথম শ্রেণীর হাকিম আদালতেও বিচার করা যাবে। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতও এর বিচার করতে পারবেন। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইনটি কার্যকর হলে ফরমালিন ব্যবহার ও ব্যবসা কার্যক্রম আইনি কাঠামোর আওতায় আসবে। বর্তমান ও ভবিষ্যতে যে সব কোম্পানি ফরমালিন ও ফরমালিন জাতীয় দ্রব্য বিপণন করবে তাদের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।