মেয়র জাহাঙ্গীর আলম এখন রাজনীতির ট্রামকার্ড!

Slider টপ নিউজ


গাজীপুর: গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাসিক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে বেশ কিছু দিন ধরে আন্দোলন চলছে। আন্দোলনের ইস্যু হল, জাহাঙ্গীর আলম গোপনে কয়েক ধাপে কথা বলে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করেছেন। এই ধরণের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করার পর ভাইরাল হয়েছে।

এই অডিওকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে ধারাবাহিক আন্দোলন। জ্বালাও পোড়াও ও ব্যানারে অগ্নিসংযোগ এমনটি ন্যক্কারজনকভাবে ব্যানারে পস্রাব করার মত ঘটনাও ঘটেছে আন্দোলনে। যারা আন্দোলন করছেন ও যারা বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে, সকলেই ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের লোক। যারা মাঠে আন্দোলনে আছেন তারা জাহাঙ্গীর আলমের ছাত্রজীবন থেকেই প্রতিপক্ষ। এই প্রতিপক্ষের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনের স্বদলীয় প্রতিপক্ষ। জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে রয়েছেন জাহাঙ্গীর আলমের নিজ দলের প্রতিপক্ষ যা পূর্বশত্রুার জেরের অংশ। তাই সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি ভিন্ন চিন্তা আসাই স্বাভাবিক যে, পূর্ব শত্রুতাবশত এটি হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু এটাও সত্য যে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে কেউ যদি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটাক্ষ করেন তবে তাকে দলে রাখা হবে গঠনতন্ত্র বিরোধী ও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রতারণার সামিল। তবে যদি কেউ বঙ্গবন্ধুকে পুঁজি করে কোন স্বার্থ হাসিল করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করেন তবে সেটাও হবে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার সামিল। এ ক্ষেত্রে কোন সম্ভাবনাকেই উড়িয়ে দেয়া যাবে না। কারণ অডিওটি প্রমানের আগেই রাজপথে জঘন্যতম রাজনৈতিক রায় হয়ে গেছে। তবে জাহাঙ্গীর আলম তার পক্ষে রাজনৈতিক কোন কর্মসূচি দেননি। তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, তার অভিভাবক আওয়ামীলীগের সভানেত্রী। তিনি যে সিদ্ধান্ত নিবেন তা তিনি মাথা পেতে নিবেন। কিন্তু জাহাঙ্গীর আলমের প্রতিপক্ষ দলীয় প্রধানের জন্য কেন অপেক্ষা করলেন না, সেটাও ভাবনার বিষয়। তারা দলীয় প্রধানের জন্য অপেক্ষা না করে রাজপথে রাজনৈতিক রায় দিয়ে দিলেন। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করার কারণে জাহাঙ্গীর আলমের শাস্তি রাজপথে হয়ে গেলো।

আওয়ামীলীগের দলীয় লোকজন বলছেন, আওয়ামীলীগ বঙ্গবন্ধুর দল। বঙ্গবন্ধুকে অপমান করে এই দলে থাকার কোন সুযোগ নেই। তবে বঙ্গবন্ধুকে অপমান করার অভিযোগ সত্য হলে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবেই। আর মিথ্যা অভিযোগ এনে রাজপথে বিশৃঙ্খলা তৈরী করে বিরোধী দলকে আন্দোলনের সুযোগ তৈরী করে দেয়ার ঘটনা হয়ে থাকলে তদন্তের দাবী রাখে। তারা আশা করেন, দল বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। সঠিত তদন্ত করে খুব তাড়াতাড়িই ব্যবস্থা গ্রহন হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাহাঙ্গীর আলমের অডিও বক্তব্য সঠিক হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ আদর্শিকভাবে বিব্রত হবে। জাহাঙ্গীর আলম যদি শাস্তি পান তবে ধরে নিতে হবে অডিও বক্তব্য সঠিক। আর এই বক্তব্য সঠিক হলে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধের চেনতনার ভাবধারা ও মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নিয়ে বিরোধী দল নতুন করে ইস্যু খুঁজে পাবে। তাই এই বিষয়টি স্পর্শকাতর ভেবেই আওয়ামীলীগ ঠান্ডা মাথায় ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করছে। জাহাঙ্গীর আলমকে ১৫দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেছে দলটি। ব্যাখ্যায় সন্তোষ্ট না হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন হতে পারে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মধ্যে সতর্ক করা, নির্ধারিত সময়ের জন্য দলীয় কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা, গাজীপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সাময়িক বা সম্পূর্ণ বহিস্কার ইত্যাদি সহ দল যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

রাজনৈতিক সচেতন মানুষ বলছেন, অডিওটি সত্য হলে জাহাঙ্গীর আলম শাস্তির মুখোমুখি হবেন কিন্তু আওয়ামীলীগের দলীয় আদর্শগত সংকট দেখা দিতে পারে এটাও ঠিক। কারণ মহান স্বাধীনতার ঘোষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের বাংলাদেশ। এই ইতিহাস এখন প্রতিষ্ঠিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *