উখিয়া ও টেকনাফ (কক্সবাজার): বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের প্রধান নেতা ও সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস এর চেয়ারম্যান মাস্টার মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং এর লম্বাশিয়া ক্যাম্পে তার অফিসে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মরদেহ পুলিশ পাহারায় কক্সবাজারের মর্গে আনা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দুকধারীরা মুহিব্বুল্লাহর অফিসে ঢুকে তার বুকে গুলি চালায়। ক্যাম্পের পুলিশের সহায়তায় তাকে চিকিৎসার জন্য কুতুপালং এম এস এফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ ১৯৯২ সালে রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তখন থেকেই সে রয়েছে টেকনাফ অঞ্চলে। মুহিবুল্লাহ আলোচনায় আসেন ২০১৮ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস উপলক্ষে কক্সবাজারে বিশাল সমাবেশ করে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এরপর বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করলে তিনি এর বিরোধিতা করে প্রত্যাবাসন আটকে দেন। মুহিবুল্লাহ প্রধান পাঁচ রোহিঙ্গা নেতার একজন হয়ে ওঠেন।
দেশের বাইরে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফর করেন একাধিক দফায়। কিন্তু ২০১৭ সালে রোহিঙ্গার ঢল নামার পর পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। সুস্পষ্টভাবে মুহিবুল্লার আজকের অবস্থানের মূল উত্থান হয় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ২০১৮ সালে ইউএনএইচসিআরকে সংযুক্ত করার পর। রোহিঙ্গাদের বক্তব্য জানার চেষ্টা থেকেই মদদ পায় মুহিবুল্লাহর সংগঠন এআরএসপিএইচ।
ইংরেজি ভাষা ও রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে দক্ষ মুহিবুল্লাহ ধীরে ধীরে বিদেশিদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন। জাতিসংঘ মহাসচিবসহ যত বিদেশি প্রতিনিধি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেছেন তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই রোহিঙ্গা প্রতিনিধি হিসেবে মুহিবুল্লাহ ও তার সঙ্গীদের সাক্ষাৎ করানো হয়েছে।