হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় বাবা মারা যাওয়ার এক ঘণ্টা পর মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এদিকে নানা ও মায়ের মৃত্যু শোক সহ্য করতে না পেরে আট ঘণ্টা পর মারা গেছে নাতনি। একইদিনে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় পুরো এলাকার মানুষ শোকাহত।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর দুইটার মধ্যে ওই তিনজনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন- চুনারুঘাট উপজেলার শ্রীকুটা গ্রামের সাজিদুর রহমান (৮৫), তার মেয়ে সুরাইয়া আক্তার (৪৬) এবং সুরাইয়ার মেয়ে উলফা আক্তার (১৪)। সন্ধ্যায় পাশাপাশি তিনটি কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়েছে।
মৃতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাজিদুর রহমান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছুদিন ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন। সম্প্রতি তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। দুইদিন আগে মেয়ে সুরাইয়া আক্তার ও নাতনি উলফা ঢাকার বাসা থেকে তাকে দেখতে চুনারুঘাটে আসেন। এরপর চিকিৎসার জন্য সাজিদুর রহমানকে ঢাকায় নেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকাল ৬টায় তিনি সেখানকার একটি হাসপাতালে মারা যান।
মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পরপরই কান্নাকাটি শুরু করেন সুরাইয়া। কিছুক্ষণ পর শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা শুরুর কিছুক্ষণ পর মারা যান তিনি। সুরাইয়া ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন।
সুরাইয়ার মেয়ে উলফা আক্তার শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ছিল। মা ও নানার মৃত্যুর পর সে কান্না করতে থাকে। বিকেলে সেও অসুস্থ অবস্থায় চুনারুঘাটে নানা বাড়িতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে।
মৃতদের নিকটাত্মীয় ফিনলে চা কোম্পানির সহকারী ব্যবস্থাপক আশরাফুল হক আক্রাম জানান, সাজিদুর রহমানের মৃত্যুর শোকে তার মেয়ে সুরাইয়া মারা গেছেন। এর আট ঘণ্টা পর মারা যায় সুরাইয়ার মেয়ে উলফা। এ ঘটনায় পুরো পরিবার বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যায় নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, সাজিদুর রহমান অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ায় মৃত্যু হয় সুরাইয়ার। তবে উলফার কি সমস্যা ছিল তা তারা জানতে পারেননি।
উবাহাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রজব আলী বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয় বিদারক। এ ঘটনায় পুরো উপজেলাবাসী শোকাহত।