গাজীপুর: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী তিনি। একই সাথে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সভানেত্রী। জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর পদক প্রাপ্তিতে আয়োজিত আনন্দ মিছিলের দলীয় কর্মসূচিতে বাঁধা ও হামলা করল কারা। হামলার ঘটনায় রক্তাক্ত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলেও পুলিশ বলছে বিষয়টি জানা নেই।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগ এ ধরণের হামলাকে নৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে সমর্থন করতে পারেনা। তাহলে প্রশ্ন এসে যায়,জাতিসংঘে অবস্থানরত অবস্থায় পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে প্রথম গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগ আয়োজিত আনন্দ সমাবেশের আনন্দ মিছিলে বিচ্ছিন্ন হামলা ও আওয়ামীলীগ এর দলীয় নেতাকর্মীদের রক্তাক্ত অবস্থা কে বা কারা তৈরি করল, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলছে।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সভাপতি জাতিসংঘে পুরস্কার পেয়েছেন, এই আনন্দ উপভোগ সমাবেশে আয়োজক ইউনিটের আওয়ামীলীগ, অংগ ও সহযোগি সংগঠনের প্রথম সারির নেতা নেতৃদের মধ্যে যারা অনুপস্থিত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ নিয়েও জল্পনা কল্পনা চলছে।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগ এর একাধিক সূত্র বলছে গাজীপুর সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মো: জাহাঙ্গীর আলম বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং এমপি ও নেতাদের নিয়ে কোন তর্কিত বা মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে থাকলে সাংগঠনিকভাবে এমনকি আইনিভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। কিন্তু নালিসী অডিও দলীয় বা আইনিভাবে উপস্থাপন না করে জাহাঙ্গীর আলমের প্রতিপক্ষ দ্বারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে জ্বালাও পোড়াও ও রক্ত ঝড়াও আন্দোলন কতটুকু যৌক্তিক সেটাও বিবেচনায় এসে যায়।
প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার প্রাপ্তির আনন্দ সমাবেশ পর্যন্ত এমনকি বর্তমান সময়েও জাহাঙ্গীর আলমকে দলীয়ভাবে শোকজ, বহিস্কার এমনকি আইনের কাছে বিচার্য্য বিষয় না করা পর্যন্ত দলীয় সভানেত্রীর সমাবেশে রহস্যজনক কারণে অনুপস্থিত নেতৃবৃন্দ আসলে কোন সাংগঠনিক কাজ করছেন তা নিয়ে ভাবছে সাধারণ মানুষ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী পোস্ট দেয়ার সাথে সাথে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ জরুরী ছিল । আইনি পদক্ষেপ নিলে ও তদন্তে সত্য প্রমান হলে এই মামলায় জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করতে আইনগত বাঁধা ছিলনা। কিন্তু তা না হয়ে মামলার আগেই রাজপথে রাজনৈতিক রায় অপরাধী প্রক্রিয়ায় ক্রমশ প্রদর্শন বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কতটুকু সম্মান প্রদর্শন করে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। একই সাথে নাশকতা মূলক কর্মকান্ডে রাজপথে পুলিশের সহঅবস্থান অনাকাঙ্খিত বলছে নগরবাসী।
আওয়ামীলীগের ত্যাগী কর্মীরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা , মুক্তিযুদ্ধ, আওয়ামীলীগ সর্বোপরী মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ অক্ষত রাখতে আমরা বদ্ধ পরিকর। স্পর্শকাতর এ ধরণের মৌলিক ইস্যুকে পুঁজি করে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও জননিরপত্তা বিঘ্ন করা গুরুতর অপরাধ।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর দায়িত্বশীল কেন্দ্রীয় একটি সূত্র জানায়, দুই অক্টোবরের পর গাজীপুরে চলমান তর্কিত বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মান করে আওয়ামীলীগ থাকবে এবং এটা নিয়ে কেউ কোন নাশকতা করবে তা হতে দেওয়া হবে না।
সূত্র বলছে, গাজীপুরের বিষয়টি কোন অশুভ চক্রের ইন্ধনে ঘটছে কিনা তাও সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে।