কক্সবাজারে ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা, গুলিতে নিহত ২

Slider জাতীয়


কক্সবাজারঃ কক্সবাজারের মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন দুজন। মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নে একটি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ কামাল ও বিদ্রোহী প্রার্থী মোশাররফ হোসেন খোকনের সমর্থদের মধ্যে গোলাগুলিতে আবুল কালাম একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। ওদিকে কুতুবদিয়া বড়ঘোপ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পিলটকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে আবদুল হালিম (৩০) নামে একজন নিহত হয়েছেন।

জানা গেছে, আজ সোমবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে কুতুবজুম ৫নং ওয়ার্ড পশ্চিম পাড়ায় জামিয়ুসসুন্নাহ দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পরই ওই কেন্দ্র এবং পার্শ্ববর্তী কুতুবজুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। গোলাগুলির ঘটনায় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা একে অপরকে দোষারোপ করছেন।

এবিষয়ে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ কামাল বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশাররফ হোসেন খোকনের সমর্থকরা ৫নং ওয়ার্ড জামিয়ুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদ্রাসা কেন্দ্রে সকাল থেকে সুশৃঙ্খলভাবে ভোটগ্রহণ চলছিল। কিন্তু খোকনের সমর্থকরা হঠাৎ ধারালো ছুরি নিয়ে কেন্দ্রে ঢুকে দুজনকে ছুরিকাঘাত করে। এরপরই পরিকল্পিতভাবে গুলি করে তারা।

এতে নিহত ও আহতরা নৌকা প্রতীকের সমর্থক-কর্মী বলে দাবি করেছেন তিনি।
তবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর করা অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশারররফ হোসেন খোকন বলেন, প্রায়ই বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দিচ্ছে শেখ কামালের সন্ত্রাসী বাহিনী। এমন খবর পেয়ে ভোটার ও তার সমর্থকরা ৪ নং ওয়ার্ডের কেন্দ্রে গেলে নৌকার প্রার্থীর ক্যাডাররা গুলি করি। এতে তার একজন সমর্থক নিহত ও ৪ জন গুরুতর আহত হয় বলে জানান।

তিনি আরো বলেন, ৫ নং ওয়ার্ডের জামিয়ুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদ্রাসা কেন্দ্রে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থী ফুটবল প্রতীকের ফরিদুল আলম ও টিউবওয়েল প্রতীকের জহিরুল ইসলামের সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেখানেও আমার লোকজন হামলা করেছে বলে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।

এবিষয়ে কুত্বুজুম ইউপি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাহামুদুর রহমান বলেন, গোলাগুলির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। দুই কেন্দ্রই পাশাপাশি। আপাতত দুই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত রয়েছে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শ্রাবস্তী রায় ও কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান।

এসপি মো. হাসানুজ্জামান বলেন, দুটি কেন্দ্রে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার ফলে ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। অতিরিক্ত ফোর্স এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। একটু পরে ভোটগ্রহণ আবার শুরু করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

এদিকে কুতুবদিয়া বড়ঘোপ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পিলটকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে আবদুল হালিম (৩০) নামে একজন নিহত হয়েছে। নিহত আবদুল হালিম বড়ঘোপ ইউনিয়নের গোলদারপাড়া এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে এবং ৭ নং ওয়ার্ড় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কিছুলোক ভোট কেন্দ্রে উচ্ছৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায়।

এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক সদস্যের গুলিতে আবদুল হালিম আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কুতুবদিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ওমর হায়দার ভোটকেন্দ্রে গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টাকালে আবদুল হালিম নামে একজন নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন। নিহতের লাশ কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। নিহত ব্যক্তি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *