গাজীপুর: গাজীপুরে এক প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে দুই বন্ধুর। এরই জের ধরে প্রবাসীর স্ত্রীর দেবর ও এক প্রেমিক মিলে হত্যা করে অন্য প্রেমিক রাসেলকে। হত্যার ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হলেও ঘটনার এক বছর দু মাস পর রহস্য উন্মোচন করেছে গাজীপুর পিবিআই। হত্যায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার গাজীপুর পিবিআইয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। পিবিআই জানায়, শ্রীপুর উপজেলার পাবুরিয়াচালা গ্রামের জমির আলীর ছেলে মো. রাসেল (১৯)কে হত্যা করা হয় এক বছর দু মাস আগে। রাসেল হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- একই গ্রামের মো. আইয়ুব আলীর ছেলে মো. রানা (২২), আ. হকের ছেলে মো. হেলাল (৪৫) ও মো. মুক্তার হোসেনের ছেলে মো. কাউছার (২৩)।
পিবিআই আরো জানায়, ২০২০ সালের ১০ই জুলাই পাবুরিয়াচালা গ্রামের বাড়ি থেকে পাশের বাজারে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হন রাসেল। পরদিন সকালে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে বনের ভেতরে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন রাসেলের বাবা। আমরা দায়েরের পর গাজীপুর জেলা পুলিশ ২০২১ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই হত্যা মামলার তদন্ত করে। এরপর পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় গাজীপুর পিবিআই। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সংস্থাটির পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলামকে। তদন্তকালে পিবিআই জানতে পারে, গ্রেপ্তার হওয়া কাউছারের প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রী নাদিরার সঙ্গে খুন হওয়া রাসেলের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। পরবর্তীতে একপর্যায়ে ওই নারীর সঙ্গে রাসেলের বন্ধু রানারও সম্পর্ক তৈরি হয়। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। রানা একপর্যায়ে নাদিরার দেবর কাউছারের কাছে ওই নারীর সঙ্গে রাসেলের সম্পর্কের কথা জানিয়ে দেন। এরপর কাউছার পরিবারের মান-সম্মানের কথা বিবেচনা করে রাসেলকে সরিয়ে দেয়ার চিন্তা করেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে রানা ও হেলালের সঙ্গে পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা মোতাবেক প্রবাসীর স্ত্রী নাদিরার মাধ্যমে ঘটনার দিন ফোনে রাসেলকে টেক গজারি বনে যেতে বলা হয়। ওই নারীর কথায় ঘটনাস্থলে যান রাসেল। সেখানে বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুললে এক পর্যায়ে রাসেলের সঙ্গে রানা, কাউছার ও বন্ধু হেলালের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওই তিনজন মিলে রাসেলের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য তারা মরদেহটি রশিতে ফাঁস লাগিয়ে গাছে ঝুলিয়ে রাখে।