ঢাকাঃ নির্বাচন দেখতে সাতদিনের সফরে রাশিয়া গেলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা। বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টায় এমিরেটস এয়ারলাইনসের ইকে-৫৩৮ নম্বর ফ্লাইটে দেশটির উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন একান্ত সচিব আবুল কাশেম মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম।
খবরটি নিশ্চিত করে ইসির যুগ্ম সচিব মো. আবুল কাসেম বলেন, কোনো অসুবিধা হয়নি। সময় মতো প্লেন ছেড়েছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের কাছে ইসির সেবা-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. শামসুল হক ফৌজদারের পাঠানো এক চিঠি থেকে জানা গেছে, তারা ২২ সেপ্টেম্বর এমিরেটস এয়ারলাইনসের ইকে-৫৮৬ নম্বর ফ্লাইটে বিকেল সাড়ে ৫টায় ফিরবেন।
রাশিয়ার জাতীয় সংসদ রাশিয়ান ফেডারেল অ্যাসেম্বলির নিম্নকক্ষ ‘স্টেট দুমা (State Duma)’-এর ভোট পর্যবেক্ষণ করতে দেশটিতে সাতদিন থাকবেন সিইসি। স্টেট দুমা নির্বাচনেও যন্ত্রে ভোটগ্রহণ করা হয়। তবে সেখানে বাংলাদেশের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হয় না। সেখানে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সিস্টেমে (অপটিক্যাল স্ক্যান ভোটিং মেশিন) ভোট হয়।
১৯৯৫ সালে প্রথম নিম্নকক্ষের নির্বাচনে এ যন্ত্রে ভোট নেয়া হয়। ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও এ যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। ২০১৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও ভোটিং মেশিন ব্যবহার করেছে রাশিয়া, তবে তা নয় শতাংশ ভোট কেন্দ্রে। বাংলাদেশ অবশ্য আগামী সংসদ নির্বাচনের অধিকাংশ কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করার পরিকল্পনা করছে।
১৭ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন সিইসি। এরপর অন্যান্য কাজ সেরে দেশে ফিরবেন।
গত ১৯ আগস্ট চিফ অ্যাকউন্টস অ্যান্ড ফাইন্যান্স অফিসারকে সিইসির সফর সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ইসির উপ-সচিব মো. শাহ আলম।
এতে বলা হয়েছে- এটি একটি অফিসিয়াল সফর। এ সময় তারা সব ভাতা পাবেন দেশীয় মুদ্রায়। থাকা-খাওয়া এবং স্থানীয় যাতায়াত ব্যয়ভার বহন করবে রাশিয়ার নির্বাচন কমিশন। তবে বিমান ভাড়া বহন করবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।
সর্বশেষ স্টেট দুমা-এর নির্বাচন হয়েছিল ২০১৬ সালে। স্টেট দুমা-এর মাধ্যমেই রাশিয়ার জনগণ তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটান। এখন থেকেই নির্বাচিত হন প্রধানমন্ত্রী। তাদের ভোটেই ক্ষমতাচ্যুত হন রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি। সংসদের এ কক্ষেই দেশটির আইন প্রণয়ন হয়।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন দেশের নির্বাচন যেমন পর্যবেক্ষণ করে থাকে, তেমনি বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণেও বিদেশিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে বাংলাদেশ সার্কের বাইরে কোনো দেশের নির্বাচন কমিশনকে কখনো আমন্ত্রণ জানায়নি।
নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন, এটি অনেকটা সৌজন্যের মতো। আমরা সার্কদেশভুক্ত নির্বাচন কমিশনকে আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকি। আবার অন্যরাও আমরাদের আমন্ত্রণ জানায়। এতে নির্বাচনের ভোটার এডুকেশন, কালচার ইত্যাদি সম্পর্কে জানা যায়। অনেক সময় এগুলোর বাস্তবায়নও করা হয়।