তালেবানদের হাতে নিগ্রহের শিকার সাংবাদিকরা

Slider বিনোদন ও মিডিয়া

তালেবানদের হাতে আক্রান্ত গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ। সংবাদ সম্প্রচার রুখতে আফগানিস্তানে সাংবাদিকদের আটক করে তাদের ওপর অকথ্য অত্যাচার চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। তালেবানদের উচিত অবিলম্বে এই হামলা বন্ধ করা, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা এবং প্রতিবাদকারী ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের জন্য দায়ী তালেবান সদস্যদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা। ৭ সেপ্টেম্বর তালেবান নিরাপত্তা বাহিনী কাবুল ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এতিলাত-ই-রোজের সাংবাদিক তাকি দরিয়াবি এবং নেমত নকদীকে আটক করে। মেয়েদের অধিকারের দাবিতে কাবুলে সংঘটিত নারীদের বিক্ষোভ কভার করছিলেন ওই ২ সাংবাদিক। এতিলাত-ই রোজ তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে যে , তালেবান কর্তৃপক্ষ তাদের ২ সাংবাদিককে কাবুলের একটি থানায় নিয়ে যায়, তাদের আলাদা কক্ষে রাখে এবং বেধড়ক মারধর করে। ৮ সেপ্টেম্বর তাদের অর্ধমৃত অবস্থায় মুক্তি দেওয়া হয়। পিঠে এবং মুখে মারাত্মক আঘাত দিয়ে এখন হাসপাতালে ভর্তি আক্রান্ত সাংবাদিকরা।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সহযোগী এশিয়া পরিচালক প্যাট্রিসিয়া গসম্যান বলেন, “তালেবান কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে যে সাংবাদিকরা যতক্ষণ পর্যন্ত ইসলামিক মূল্যবোধকে সম্মান করবে’ ততক্ষণ মিডিয়াকে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে না । ”প্যাট্রিসিয়া বলেছেন , সাংবাদিকরা যাতে কোনোরকম ভয় -ভীতি ছাড়াই খবর সংগ্রহ করতে পারেন সেই বিষয়টা তালেবানদের নিশ্চিত করতে হবে। গত ৭ সেপ্টেম্বর একই দিনে তালেবান কর্তৃপক্ষ আরো এক চিত্র সাংবাদিক ওয়াহিদ আহমদীকে আটক করে এবং তার থেকে ক্যামেরা কেড়ে নেয়। ওয়াহিদের সঙ্গে বাকি যে সমস্ত চিত্র সাংবাদিকরা আফগান নারীদের প্রতিবাদ কভার করছিলেন তাদের ক্যামেরাও কেড়ে নেওয়া হয়। শিক্ষা এবং চাকরির অধিকারের দাবিতে সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে, আফগান নারী ও মেয়েরা বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। নারীরা এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছেন , পুরুষরাও তাদের সাথে যোগ দিয়েছেন। শত শত বিক্ষোভকারীদের কাবুলের মধ্য দিয়ে তালেবানদের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক স্লোগান দিতে দেখা গেছে। বিক্ষোভ দমাতে তালেবান নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের মারধরের পাশাপাশি হুমকি দিয়েছে সাংবাদিকদের। তাদের ক্যামেরা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তালেবানদের দাবি যে বিক্ষোভকে তারা অনুমোদন দেয়নি সেই বিক্ষোভ অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। সেই বিক্ষোভের খবর করাও অবৈধ বলে গণ্য করা হবে। সাংবাদিকরা দীর্ঘদিন ধরেই তালেবানি হুমকির শিকার। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মোতাবেক সাংবাদিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর নির্বিচারে বিধিনিষেধ আরোপ করা যায় না , সাংবাদিকদের আটক করা এবং গণমাধ্যমকে নিষিদ্ধ করাও আইন বিরুদ্ধ। প্যাট্রিসিয়া গসম্যান -এর মতে , ‘নারীদের অধিকারের প্রতি তালেবানদের যত্নশীল হওয়া উচিত। দেশের নাগরিকদের স্বাধীন মত প্রকাশ এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দিতে প্রয়োজন পড়লে তালেবানদের ওপর চাপ দিতে হবে যাতে তারা নিজেদের অবস্থান বদলায়। ‘

সূত্র : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *