তালেবানরা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করেছিল ১৫ আগস্ট। এর পর তিন সপ্তাহের বেশি সময় পর গত মঙ্গলবার তারা ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা হাজির করেছে। কিন্তু এর আগে তারা বারবার বলে আসছিল, নতুন সরকার হবে সবার অংশগ্রহণে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’। কিন্তু সরকার ঘোষণার পর দেখা গেল, তালেবানের মধ্যে ‘পুরনো মুখ’ ছাড়া নতুন কোনো অংশের প্রতিনিধি সরকারে জায়গা পাননি। তা হলে এটি কেমন ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ সরকার হলো। ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, এ সরকারে দেশটির সব অংশের প্রতিনিধির অংশগ্রহণ নেই- এ কারণে তারা তালেবানকে সতর্কও করেছে। খবর ডন।
আগের দেওয়া অঙ্গীকার অনুযায়ী নতুন সরকারে আরেকটি বিষয়ে অসঙ্গতি রয়েছে- তা হলো নারী প্রতিনিধি। তালেবান নেতৃবৃন্দ বারবার বলে আসছিলেন, সরকারে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। কিন্তু নতুন সরকারে কোনো নারীকে স্থান দেওয়া হয়নি। গত মঙ্গলবার যে সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিপরিষদের নাম ঘোষণা করেন- সেখানেই বিবিসির সাংবাদিক প্রশ্ন তুলেছিলেন, কোনো নারী প্রতিনিধির নাম আসছে না কেন। জাবিউল্লাহ জবাবে বলেছিলেন, এখনো নতুন সরকারের প্রতিনিধির নাম ঘোষণার বাকি রয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তালেবানের ‘অন্তর্বর্তীকালীন’ সরকার দেশটির বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতিনিধিকে যুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ২৭টি দেশের এই জোট জানিয়েছে, বিগত সপ্তাহগুলোয় তালেবানরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, আফগানিস্তানে নতুন সরকারে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠী ও ধর্মের প্রতিনিধিদের যোগ করা হবে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে এটি কোনোভাবেই অন্তর্ভুক্তিমূলক নয়।
মঙ্গলবার ঘোষণা অনুযায়ী নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে মোল্লা হাসান আখুন্দকে। আর উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দুজনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে-তাদের একজন মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার; অপরজন হলে মৌলভী আবদুল সালাম হানাফি।
এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীপদে যাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে তারা সবাই তালেবানের শীর্ষনেতা। অর্থাৎ মন্ত্রিপরিষদে কোনো নতুন মুখ নেই। আফগানিস্তানে অন্য কোনো ধর্ম বা নৃগোষ্ঠীর সদস্যকেও সরকারে স্থান দেওয়া হয়নি। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, তালেবানের নতুন সরকারকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি পেতে বেশ বেগ পেতে হবে।