ঢাকাঃ এই মৌসুমে বাজার ও রাস্তাঘাটে বিভিন্ন ধরনের আখ পাওয়া যায়। এই আখকে অনেকে গ্যান্ডারি বলেও চেনেন। কোন কোন এলাকায় ইক্ষু নামেও প্রচলন রয়েছে আখের। একে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি শরবতও বলা যায়। উপরের শক্ত আবরণ ফেলে মুখে নিয়ে চাপ দিলেই রসে ভরে যায়। তৃপ্তিও আসে দারুণ। নিমিষেই মন জুড়ায়। শুধু মনই জুড়ায় না, আখের রস আমাদের শরীরের নানা উপকারে আসে।
আখে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, জিঙ্ক, পটাশিয়াম। এই উপাদানগুলো নানাভাবে আমাদের শরীরের উপকারে আসে। আমরা অনেকেই আখের রস খেতে ভালবাসি। এজন্য এর রস সংগ্রহ করে থাকি। কিন্তু চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন আখ চিবিয়ে খাওয়ার।
এবার জেনে নেয়া যাক আখের রসের উপকারিতা :
* জন্ডিস হলে আখের রস খেতে বলেন চিকিৎসকরা। এই পানীয় যকৃতের কার্যক্রমে সহায়তা করে। পাশাপাশি শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে লিভার ভালো রাখে। জন্ডিস ও অন্যান্য যকৃতের রোগ প্রতিরোধে আখের রসের বিকল্প নেই।
* আখের রসে থাকা কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, আয়রন, পটাশিয়ামসহ অন্যান্য উপাদান কর্মশক্তি বাড়িয়ে দেয়।
* কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে আখের রস। এটি যেহেতু আঁশজাতীয় খাবার, তাই হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
* আখের রসে ‘গ্লাইকোলিক অ্যাসিড’ এর মতো ‘আলফা-হাইড্রক্সি অ্যাসিডস’ (এএইচএ) রয়েছে। যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া ব্রণ প্রতিরোধও করে।
* আখের রসে থাকা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও অন্যান খনিজ উপাদান দাঁতের ‘এনামেল’ শক্তিশালী ও ক্ষয়রোধ করে। অন্যদিকে আখ দাঁত মজবুত করে ও মাড়ির সমস্যা দূর করে।
* ক্যান্সার প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে আখের রস। বিশেষ করে প্রস্টেট ও স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে। আখে থাকা ‘ফ্লাভানয়েড’ ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষকে ছড়াতে দেয় না।
* আখের রস দ্রুত পানি শূণ্যতা দূর করে এবং শরীরে তাতক্ষণিকভাবে শক্তি যোগায়।
* এছাড়া আখের রস কিডনির স্বাস্থ্য ভাল রাখে, হাত-পায়ের নখ মজবুত করে, পুষ্টির অভাব পূরণ করে এবং নিশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করে।
তবে ডায়াবেটিস রোগীরা ভাবতে পারেন আখের রস রক্তে সুগারের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। কিন্তু আখের রসে আছে প্রাকৃতিক চিনি যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি রোধ করে। তবে যারা ডায়াবেটিস-২ টাইপে ভুগছেন তারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন। অবশ্যই এড়িয়ে যাবেন ফুটপাতের বরফ মেশানো আখের রস।