করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ধরনের বিস্তারে গেল জুলাই মাসে মহামারীর সবচেয়ে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এই এক মাসেই করোনা কেড়ে নিয়েছে ৬ হাজার ১৮১ জনের প্রাণ। আর গতকাল আগস্ট মাস শুরু হয়েছে ২৩১ জনের মৃত্যুর হিসাব দিয়ে। আগের দিন সকাল ৮টা থেকে গতকাল রবিবার একই সময় পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এসব মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যা চলতি মাসের আসন্ন দিনগুলো নিয়ে আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে নতুন রোগীও। এ সময় প্রায় ৫০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১৪ হাজার ৮৪৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল ২৯.৯৭ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৩০.২৪ শতাংশ। এ মুহূর্তে দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা এক লাখ ৫০ হাজার ১৪৬ জন। সব মিলে গত আট দিন ধরে দেশে মৃত্যু দুশর ওপরে রয়েছে। এ নিয়ে
দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৮ জন। তাদের মধ্যে মোট প্রাণ গেছে ২০ হাজার ৯১৬ জনের।
নমুনা পরীক্ষা ৩১ হাজারে নেমে আসায় গত শনিবার শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও ৯ হাজার ৩৬৯ জনে নেমে এসেছিল, আর মৃত্যু হয়েছিল ২১৮ জনের। কিন্তু গতকাল দুই সংখ্যাই ফের বাড়ল। গত একদিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ৮ হাজার ৩৫৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা দিনের মোট আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি। এই সময়ে যে ২৩১ জন মারা গেছেন, তাদের ৭৭ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৩ এবং খুলনা বিভাগে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি হিসেবে দেশে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ১৫ হাজার ৫৪ জন গত একদিনে সেরে উঠেছেন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১০ লাখ ৯৩ হাজার ২৬৬ জন সুস্থ হলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের এপ্রিল, মে আর জুন মাস মিলিয়ে দেশে যত রোগী শনাক্ত হয়েছে তার চেয়ে গত জুলাই মাসেই শনাক্ত হয়েছে বেশি। এই এক মাসেই মারা গেছে আগের ছয় মাসের প্রায় সমান রোগী। এই এক মাসে দেশে মোট ৩ লাখ ৩৬ হাজার ২২৬ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ে, মৃত্যু হয়েছে ৬১৮১ জনের। একক মাস হিসাবে এত রোগী শনাক্ত বা মৃত্যু এর আগে দেখতে হয়নি বাংলাদেশকে।
তথ্য বলছে, দেশে এখন পর্যন্ত যারা করোনায় মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ ১৪ হাজার ১৪২ জন ও নারী ৬ হাজার ৭৭৪ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী ২ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ৩ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ১৯ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ৩৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ৪৬ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সী ৭২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সী ৪৫ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়সী ৯ জন এবং ৯১ থেকে ১০০ বছর বয়সী একজন মারা গেছেন।