ফাহিমা নূর/ ইসমাইল মাষ্টারঃ গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার ইতিহাসে এত সাংবাদিক গ্রেফতার নির্যাতন, হয়রানি ধারাবাহিকভাবে কম সময়ে বেশি হয়েছে, জানা নেই। ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা এবং পুলিশ রিপোর্ট নানা উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে। মনে হচ্ছে অপরাধীরা নিরাপদ বোধ করেই অপরাধ সংঘটন বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর বিপরীতে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে সুষ্ঠ তদন্ত বার বার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এই কারনে গাজীপুর জেলার সকল থানার মধ্যে শ্রীপুর থানা নিয়ে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা বাড়ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘরের ভেতর প্রবেশ করে সিনেমার স্টাইলে এক ছাত্রলীগ নেতাকে খুন করা হল। ঠুনকো অজুহাতে আগুন দিয়ে পুঁড়ে মারা হল। আইনী ব্যবস্থায় তেমন কোন অগ্রগতি নেই।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শ্রীপুর থানায় ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় মামলার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। এ সকল মামলার তদন্তের রিপোর্ট বলছে, নিরপরাধ লোকও হয়রানি হচ্ছে। আবার ধর্ষিতা অনেক ভিকটিম বিচার পেতে তদন্তে তেমন সহযোগীতাও পাচ্ছে না। বিষয়টি উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে।
তথ্য বলছে, একজন বিধবা নারী সন্তানসহ পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে থানার বারান্দায় মাসের পর মাস অপেক্ষা করছে। পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ভিকটিমের বাসায় একাধিকবার আপোষ মিমাংসার জন্য দেনদরবার করছে। স্থানীয় এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান পুলিশকে বলেও এতিম পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছেন না।
অনুসন্ধান বলছে, শ্রীপুর থানার গোসিংগা এলাকার এক হতদরিদ্র ব্যাক্তির পিকআপ ভ্যান দীর্ঘদিন যাবৎ থানায় আটকে রেখেছিল পুলিশ। থানা থেকে পিকআপ ভ্যান নিতে নিতে কিস্তির পরিমান প্রায় পিকআপের মূল্যের সমপরিমান হয়ে গেছে।
ঈদুল ফিতরের আগে বনভূমি জবর দখলের সংবাদ দিতে গিয়ে জবর দখল কারীদের আক্রমণে রক্তাক্ত হয় সাংবাদিক। কিন্তু পুলিশ আক্রমণ কারীদের মামলায় সাংবাদিক চালান করে দেয়। কিছু দিন আগে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আরেক সাংবাদিককে গণপিটুনি দিয়ে থানায় সোপর্দ করা হয়। পরবর্তী সময় পুলিশ তাকে চালান দেয়। আরেক সাংবাদিক কিছু দিন পর কারাগারে যায়। সংবাদ দেয়ার জেরে এই কারাবরণ।
সম্প্রতি শ্রীপুর থানার সন্নিকটে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় এক সাংবাদিককে ধরে ইট দিয়ে মাথা থেতলে দেয় অপরাধীরা।
স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা বলছেন, সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনাই পুলিশ ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়ে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনাগুলো সুষ্ঠ তদন্ত অন্যখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে।
এদিকে কোন সাংবাদিক নির্যাতন হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পক্ষে বিপক্ষে নানা ধরনের লেখালেখি পাওয়া যায়। পেশাদারিত্বের সংকটের কারনে এবং কিছু লোক সাংবাদিকতার আবরণে পুলিশের দালালি করায় সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা বাড়ছে। সাংবাদিকদের আভ্যন্তরিন বিরোধের সুফল নিচ্ছে প্রশাসন।
সাধারণ মানুষ বলছেন, অতিমারি করোনা,ডেঙ্গু ও থেমে থেমে ছোট বড় লকডাউনে জীবন যাত্রা যেখানে থমকে গেছে, ঠিক এই সময়ে সেবা কাজে নিয়োজিতদের এহেন আচরণ প্রত্যাশিত নয়। রাষ্ট্রের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত জরুরী হয়ে গেছে।