গাজীপুরঃ একজন মেয়র একজন সেবক। একজন মেয়র রাজমিস্ত্রী। একজন মেয়র একজন শ্রমিক।
উদ্দেশ্য নগরবাসীকে ঈদের যানজট থেকে রক্ষা করা। কাজের দ্রুত অগ্রগতির জন্য রাস্তার কাজে ব্যবহৃত সয়েল কম্পোক্টরের (বিশেষ ধরনের রোলার মেশিন) স্টিয়ারিং হাতে তুলে নেন মেয়র নিজেই। শ্রমিকদের পাশাপাশি মেয়রও ঘণ্টার পর ঘণ্টা সয়েল কম্পোক্টর মেশিন চালিয়ে যান। চেষ্টা করছেন ঈদের আগেই গাজীপুর শহরের সুকন্দিরবাগ ব্রিজ থেকে টঙ্গীর বনমালা রেলগেট পর্যন্ত সড়কটি যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তোলা।
নিজে স্বশরীরে রাস্তার কাজ করে রাস্তা নির্মান করায় সড়কটির নামকরণ মেয়রের নামে করারও দাবী উঠেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর থেকে রাজধানীর এয়ারপোর্ট পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ চলছে কয়েক বছর ধরে। এতে ওই সড়কে গাজীপুর অংশে প্রতিদিন তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। গাজীপুরবাসীকে এ যানজটের কবল থেকে রক্ষার জন্য টঙ্গী পর্যন্ত একটি বিকল্প সড়ক তৈরির কথা ভাবছিল সিটি করপোরেশন।
এতদিন গাজীপুর শহরের সুকন্দিরবাগ ব্রিজ থেকে টঙ্গীর বনমালা রেলগেট পর্যন্ত রেল লাইনের পাশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করছিল। সম্প্রতি জয়দেবপুর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত রেললাইন ডাবল হওয়ার কারণে রেলওয়ে তাদের জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে ডাবল রেললাইন নির্মাণ কাজ শুরু করে। এতে করে হাজার হাজার মানুষের বিকল্প পথে টঙ্গী হয়ে ঢাকায় যাওয়ার রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়।
এ অবস্থায় মেয়র রাস্তার পাশের জমির মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে রাস্তাটি প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নেন। জমির মালিকরাও স্বেচ্ছায় জায়গা দিতে রাজি হন। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম এ বিকল্প রাস্তাটি দ্রুত তৈরির জন্য প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশ দেন। এরপরই কিছু দিন ধরে রেল লাইনের পূর্ব পাশে গভীর খাদ বালি দিয়ে দিন রাত ভরাট করে সয়েল কম্পোক্টর দিয়ে সমতল করা হচ্ছে।
মেয়র প্রতিদিন রাস্তার কাজ পরিদর্শন করছেন। আবার কখনো গভীর রাতে নিজ হাতে সয়েল কম্পোক্টর চালিয়ে রাস্তার বালি ভরাট ও সমতল কাজ করছেন।
গাজীপুর সিটির মেয়র জাহাঙ্গীর আলম জানান, টঙ্গীর বনমালা রেলগেট থেকে সুকন্দিরবাগ ব্রিজ পর্যন্ত বিকল্প এ রাস্তাটি গাজীপুর শহরে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এ রাস্তাটি গাজীপুর সিটি এলাকায় যানজট এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আর ঈদের আগেই বিকল্প সড়ক চালুর চেষ্টা চলছে। এটির কাজ দ্রুত শেষ করতে দিন-রাত চেষ্টা করছে গাজীপুর সিটির প্রকৌশল বিভাগ।
প্রকল্প এলাকার স্থানীয় ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সফিউদ্দিন সফি জানান, বিকল্প রাস্তাটি চালু হলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর একদিকে যেমন চাপ কমবে, তেমনি টঙ্গী থেকে গাজীপুর সদরে অল্প সময়ে আসা-যাওয়া করা যাবে। অপরদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলমান বিআরটি প্রকল্পের কারণে দীর্ঘ যানজট ও ধুলাবালুসহ নানা বিড়ম্বনা থেকে নগরবাসী রক্ষা পাবেন।