করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শিথিল হতে পারে। শিথিল হতে যাওয়া লকডাউনে চলতে পারে গণপরিবহন, খুলতে পারে শপিং মল ও দোকানপাট। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার থেকে এক সপ্তাহ চলবে ট্রেন। তবে করোনার এই পরিস্থিতিতে দোকান খোলার পক্ষে নয় বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি।
সংগঠনটির সভাপতি হেলাল উদ্দিন সোমবার বলেন, ‘কোরবানির ঈদে এমনিতেই আমাদের ব্যবসা কম থাকে। এ ছাড়া এখন করোনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এ অবস্থায় আমরা দোকান মালিক সমিতি দোকানপাট খোলার পক্ষে নই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের যে ক্ষতিটা হওয়ার তা হয়ে গেছে। দোকানের ভেতরে যে মালগুলো আছে, সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। কঠোর যে লকডাউন দেওয়া হয়েছে, আর যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, যেভাবে মৃত্যু বাড়ছে, এ অবস্থায় দোকানপাট খুলে দেওয়ার কথা বলার সাহস আমাদের নেই। রমজানের ঈদ সামনে রেখে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খুলেছিলাম। তখন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ছিল। এখন নিয়ন্ত্রণে নেই।’
হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘ভারতের চেয়ে আমাদের এখানে সংক্রমণ বাড়ছে। জনসংখ্যার বিচারে শতাংশ হিসাব করলে ভারতের চেয়ে এখানে মৃত্যুও বেশি। ভারতে কখনো ৩০ শতাংশের বেশি সংক্রমণ হয়নি। এখানে ৩০ শতাংশের বেশি সংক্রমণের হার। কোথাও কোথাও ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ সংক্রমণ হচ্ছে। ভারতের চেয়ে আমরা এখন অসম্ভব খারাপ অবস্থার মধ্যে আছি। কাজেই এই পরিস্থিতিতে দোকানপাট খোলার পক্ষে আমরা নই।’
দোকান মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, ‘১৪ তারিখ পর্যন্ত লকডাউন। মাত্র দুই-তিন দিনের জন্য দোকান খুললে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিতে হবে। ভাড়া দিতে হবে। সমিতির চাঁদা, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিল দিতে হবে।’ এই তিন দিন দোকান খুলে এত টাকা দেওয়া কারোর পক্ষেই সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘এই দুই দিন বা তিন দিনের জন্য কোরবানির গরু কেনা ছাড়া কেউ বাইরে বের হবে না। সে ক্ষেত্রে আমরা এখন চুপচাপ থাকতে চাই। দোকান মালিক সমিতির কেউ দোকান খোলার পক্ষে না। সরকার যেভাবে চায়, আমরা সেভাবেই চলতে চাই।’
কোরবানির ঈদের বিবেচনায় লকডাউনের শর্ত শিথিল হতে পারে। আগামী ১৫ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে এক আসন ফাঁকা রেখে চলবে গণপরিবহন। খুলে দেওয়া হবে দোকানপাট, শপিংমল। এ সময় সরকারি অফিস ভার্চুয়ালি খোলা থাকলেও বন্ধ থাকবে বেসরকারি অফিস।
১৫ জুলাই ভোর ৬টা থেকে ২৩ জুলাই ভোর ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিলের আদেশ কার্যকর থাকবে। ঈদের পর আবারও দুই সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হতে পারে। জানা গেছে, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে সরকার।