নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড লিমিটেডের জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হাসেমসহ ৮ জনের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল শনিবার বিকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খানমের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত শুনানি শেষে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে কড়া পুলিশ প্রহরায় তাদের আদালতে আনা হয়। এবং আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, রূপগঞ্জ থানায় দায়ের করা মামলায় আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা নং-১৯। মামলার বাদী রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম। তার চার ছেলে হাসিব বিন হাসেম, তারেক ইব্রাহীম, তাওসীব ইব্রাহীম ও তানজীম ইব্রাহীম। অন্য তিনজন হলেন- প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহান শাহ আজাদ, হাসেম ফুড লিমিটেডের ডিজিএম মামুনুর রশিদ ও এডমিন প্রধান সালাউদ্দিন।
প্রসঙ্গত, রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় ৮ই জুলাই বিকাল সাড়ে ৫টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। কারখানার ৬ তলা ভবনটিতে তখন প্রায় ৪শ’র বেশি কর্মী কাজ করছিলেন। কারখানায় প্লাস্টিক, কাগজসহ মোড়কীকরণের প্রচুর সরঞ্জাম থাকায় আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সব ফ্লোরে। কারখানার সিঁড়ির দরজা তালাবদ্ধ থাকায় মৃতের সংখ্যা এতো বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। প্রচুর পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় কয়েকটি ফ্লোরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের ২০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে।
শুক্রবার দুপুরে কারখানার ভেতর থেকে একসঙ্গে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে, প্রাণ বাঁচাতে লাফিয়ে পড়ে ও আগুনে পুড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। সব মিলিয়ে গতকাল শনিবার বিকাল পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়। কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।