নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ’র সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলেই দুজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- স্বপ্না রানী (৪৫) ও মিনা আক্তার (৩৩), মোরসালিন (২৮)। আগুনের ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।
রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ। প্রতিষ্ঠানটির কারখানায় লাগা আগুনে আহতদের স্থানীয় ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানের কারখানায় আগুনের ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবনটির আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ৬ তলা পর্যন্ত আগুন জ্বলছে।
আগুনে গুরুতর দগ্ধ মোরসালিনকে (২৮) রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে নিহত স্বপ্না রানীর বাড়ি সিলেট জেলায়। তার স্বামীর নাম যতি সরকার। মিনা আক্তারের স্বামীর নাম হারুন মিয়া। তারা রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কারখানার নিচতলার একটি ফ্লোরের কার্টন থেকে হঠাৎ করে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এক পর্যায়ে আগুন বাড়তে থাকে। পরে পুরো ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ভবনে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা ছোটাছুটি শুরু করে। অনেকে ৭ তলা ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। সেখান থেকে অনেকে লাফ দেন। রানী ও মিনা ছাদ থেকে লাফিড়ে পড়ে মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ওই দুই নারীর মৃত্যুর বিষিয়ে নিশ্চিত করেন ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, কারখানার ভবনের ভেতর আরও শ্রমিক আটকা আছেন। তাদের বের করা না গেলে সবাই মারা পড়বেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আব্দুল আল আরিফিন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে যাচ্ছে। তবে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আটকা পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে।