করোনা মহামারী সত্ত্বেও জাঁকজমপূর্ণ আয়োজনে পর্দা উঠল কান চলচ্চিত্র উৎসবের। দুই বছরেরও বেশি সময় পর পালে দে ফেস্টিভ্যাল চত্বরে বসল লালগালিচা। সিনেমা ও রুপালি পর্দার ঝলকানি শুরু হলো ভূমধ্যসাগরের তীরে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির পর সশরীরে তারকা ও দর্শক উপস্থিতিতে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আয়োজন এটাই। বিশ্ব চলচ্চিত্রের তীর্থভূমি দক্ষিণ ফরাসি উপকূলীয় শহরে গত ৬ জুলাই সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ২৫ মিনিট) ৭৪তম কান উৎসবের পর্দা উঠে। পালে দে ফেস্টিভ্যাল ভবনের গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরের মঞ্চে উদ্বোধন ঘোষণা করেন দক্ষিণ কোরিয়ার পরিচালক বঙ জুন হো। ২০১৯ সালে স্বর্ণপাম জয়ের পর গত বছর অস্কারে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়ে ইতিহাস গড়ে তার ‘প্যারাসাইট’। উদ্বোধনী আয়োজন সঞ্চালনা করেন ফরাসি অভিনেত্রী দোরা তিলিয়ের। তার আগে লালগালিচায় পা মাড়ান মূল প্রতিযোগিতা বিভাগের বিচারকরা। এবারের আয়োজনে তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গ পরিচালক স্পাইক লি। আগামী ১৭ জুলাই উৎসবের সমাপনীতে তিনিই স্বর্ণপাম জয়ী ছবির নাম ঘোষণা করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানসূচক স্বর্ণপাম পেয়েছেন মার্কিন অভিনেত্রী জোডি ফস্টার। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন স্প্যানিশ পরিচালক পেদ্রো আলমোদোভার। গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরে উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতার পর দেখানো হয় ৭৪তম কান উৎসবের উদ্বোধনী ছবি ‘অ্যানেট’। এটি প্রখ্যাত ফরাসি পরিচালক লিও ক্যারাক্সের ষষ্ঠ ও ইংরেজি ভাষার প্রথম চলচ্চিত্র। যুক্তরাষ্ট্রের রন ও রাসেল মায়েল ভ্রাতৃদ্বয় এর চিত্রনাট্য লিখেছেন।
এদিকে উৎসবের দ্বিতীয় দিনে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। গতকাল বাংলাদেশ সময় ৩টা ১৫ মিনিটে (স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ১৫ মিনিট) দেখানো হয় ছবিটি। এটি দেখতে দুবুসিতে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, সিঙ্গাপুরের প্রযোজক জেরেমি চুয়া, চিত্রগ্রাহক তুহিন তমিজুল, প্রোডাকশন ডিজাইনার আলী আফজাল উজ্জল, শব্দ প্রকৌশলী শৈব তালুকদার, কালারিস্ট চিন্ময় রয় এবং নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু। এর আগে ছবিটি দেখতে বিভিন্ন দেশের সংবাদকর্মী এবং মার্শে দ্য ফিল্মে অংশগ্রহণকারী ফিল্ম প্রফেশনালদের মধ্যে বিপুল আগ্রহ দেখা গেছে। সকাল থেকে ছবিটি দেখতে লম্বা লাইন ধরেন দর্শকরা। কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৪তম আসরে অফিসিয়াল সিলেকশনের বিভাগ আঁ সার্তে রিগায় স্থান পেয়েছে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’।